আনিছ রহমানের (৪২) বাড়ি নাটোরের গুরুদাসপুরে। ২০১০ সালে কাজের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন মালয়েশিয়ায়। যে প্রতিষ্ঠানে তিনি কাজ করতেন সেখানকার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সিটি হাসনারের (৩২) সঙ্গে পরিচয় থেকে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। বিয়ে করতে চাইলেও সে দেশের আইনি বাধার কারণে সম্ভব হয়নি। এরপর আনিছ করোনার সময় দেশে ফিরে আসেন। আর যাননি। কিন্তু গতকাল শনিবার সকালে মালয়েশিয়া থেকে নাটোরে এসেছেন সিটি হাসনার।
আজ রোববার দুপুরে নাটোর আদালত চত্বরে তাঁরা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিয়েও সম্পন্ন করেন। আনিছ রহমান নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর গ্রামের জলিল রহমানের ছেলে। সিটি হাসনার মালয়েশিয়ার মশিন জাকরির মেয়ে। নাটোর আদালত চত্বরের কাজী রিয়াজুল মমিনের কাছে তাঁরা মুসলিম বিবাহ রেজিস্ট্রেশন আইন অনুসারে বিয়ে করেন। পরে আইনজীবী স্বপন সরোয়ার তাঁদের বিয়ের হলফনামা সম্পন্ন করেন।
স্বপন সরোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, আনিছ রহমান ও সিটি হাসনারের মধ্যে সাড়ে তিন লাখ টাকা মোহরানা ধার্যে বিবাহ নিবন্ধন হয়েছে। তাঁরা স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ১৮ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা হবেন। নবদম্পতিকে অভিনন্দন জানানোর জন্য উভয় পরিবারের সদস্যরা আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন।
আনিছ রহমান বলেন, কাজের জন্য ২০১০ সালে মালয়েশিয়ায় গিয়ে সিটি হাসনারের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তিনি তাঁর অধীনেই কাজ করতেন। কিছুদিনের মধ্যে তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আইনি জটিলতার কারণে তাঁরা সেখানে বিয়ে করতে পারেননি। দীর্ঘ ১৪ বছর অপেক্ষার পর অবশেষে বাংলাদেশে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।
সিটি হাসনার ও তাঁর মায়ের সঙ্গে আনিছ রহমান
আনিছ রহমান বলেন, ‘আমরা একে অপরকে ভীষণ ভালোবাসি ও বিশ্বাস করি। যার কারণে আমি করোনার সময় দেশে চলে এলেও পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগের বিন্দুমাত্র ঘাটতি হয়নি। আমরা অপেক্ষা করেছি চূড়ান্ত পরিণতির জন্য।’
বিয়ের পর সিটি হাসনার বলেন, তাঁদের সম্পর্কের বিষয়টি উভয় পরিবারের লোকজন জানতেন। প্রায় পাঁচ বছর আগে উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁদের মধ্যে বাগ্দান হয়েছিল। ভিসা জটিলতার কারণে তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে দেখা করতে পারছিলেন না। অবশেষে তিনি তাঁর মাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন।
আনিছের পরিবারের লোকজনের প্রশংসা করে সিটি হাসনার বলেন, সবাই তাঁকে সাদরে গ্রহণ করেছেন। বহু মানুষ তাঁদের দেখার জন্য আসছেন। বিষয়টি তাঁর ভালো লেগেছে। তিনি সবার কাছে তাঁদের জন্য মঙ্গল কামনা করেন।