রাজধানীর ধানমন্ডিতে বাংলাদেশ আই হসপিটাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউটে ইরতিজা আরিজ হাসান নামের ১৮ মাস বয়সী শিশুর ভালো চোখে অস্ত্রোপচার করার অভিযোগে চক্ষুরোগ–বিশেষজ্ঞ সাহেদ আরা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল বুধবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে এলিফ্যান্ট রোডের বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহমেদ মাসুদ আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, চিকিৎসক সাহেদ আরাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শিশুটির বাবা মো. মাহমুদ হাসান গতকাল দিবাগত রাতে চিকিৎসককে আসামি করে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার বিকেলে শিশু ইরতিজার চোখের সমস্যা নিয়ে তার মা-বাবা ওই হাসপাতালে যান। বাঁ চোখের মধ্যে ময়লাজাতীয় কিছুর অস্তিত্ব নিশ্চিত করেন চিকিৎসক। সেদিনই রাত সাড়ে আটটার দিকে তার অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক। তবে সেখান থেকে ইরতিজাকে বের করার পর স্বজনেরা দেখতে পান বাঁ চোখের জায়গায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে ডান চোখে। তখন বিষয়টি চিকিৎসককে জানালে তিনি দুঃখপ্রকাশ করেন এবং ইরতিজার বাঁ চোখে অস্ত্রোপচার করেন। চিকিৎসক ভুল চিকিৎসার বিষয়টি মৌখিকভাবে স্বীকার করলেও তা নথিভুক্ত করেননি। পরে তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা কিছু না জানিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান।
এ বিষয়ে হাসপাতালের চিফ অপারেটিং কর্মকর্তা কাজী মেজবাহুল আলম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, শিশুটির চোখের পাতার নিচে ফরেন বডি (চোখের পাপড়ি) ও ঘর্ষণজনিত সমস্যা থাকায় তা বের করে আনা হয়। এটি অস্ত্রোপচার নয়। শিশুটির বয়সের কারণে আউটডোরে চিকিৎসা না করে তাকে অস্ত্রোপচারের কক্ষে নেওয়া হয়। তাকে এক্সামিনেশন আন্ডার অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়। প্রথমে ডান চোখের পাপড়ি সরানো হয়। পরে শিশুটির মা-বাবার কথার পরিপ্রেক্ষিতে বাঁ চোখ আবার পরীক্ষার জন্য অস্ত্রোপচারের কক্ষে নেওয়া হয়। বাঁ চোখ থেকেও চোখের পাপড়ি সরানো হয়। শিশুটির চোখ ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয়।
ওই বিবৃতিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরও বলেছে, এটি এ ধরনের চিকিৎসার প্রচলিত পদ্ধতি। অস্ত্রোপচার নয়। পরবর্তী সময় চিকিৎসাব্যবস্থা অনুসরণ করলে শিশুটির চোখে কোনো ক্ষতি হবে না। এ নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।