ঈশ্বরদী হাসপাতালে হঠাৎ করে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন তীব্র গরম এবং রমজানের পর পবিত্র ঈদুল ফিতরে অতি প্রোটিনযুক্ত খাওয়ার অনিয়মের কারণে এ সমস্যা হয়েছে। এদিকে হাসপাতালে দুই দিনে গড়ে ২৪ জন রোগী ভর্তি হলেও ফিরে গেছেন অনেকেই।
জানা গেছে, ঈশ্বরদী ৫০ শয্যার হাসপাতালের একটি ওয়ার্ড ঈদের ছুটির জন্য বন্ধ রাখায় অনেক রোগীই ফিরে যাচ্ছে। আবার কেউ কেউ চিকিৎসাপত্র নিয়ে বাড়িতে রয়েছেন। সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডাক্তারের চেম্বারে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন।
গত কয়েকদিন ধরেই ঈশ্বরদীর ওপর দিয়ে বইছে তীব্র এবং অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। এ মৌসুমে ঈশ্বরদীতে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৮ থেকে ৪৩ ডিগ্রি পর্যন্ত রেকর্ড হয়েছে। শনিবার ও রবিবার গরমের উত্তাপ কিছুটা কমলেও বৃষ্টির দেখা মেলেনি। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় অসহনীয় গরমে মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। এরিমধ্যে চলেছে পবিত্র রমজান। চিকিৎসকরা বলছেন, রমজানে ভাজা-পোড়া খাবার খেতে হয়েছে। এক মাস রোজার পর ঈদের দিন তিনবেলা ভালো খাবার খেয়ে অনেকেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।
রবিবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর একটার দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়ার আলাদা কোন ওয়ার্ড নেই। দোতালার ২টি ওয়ার্ডে অন্যান্য রোগীর পাশাপাশি ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ১টি বেডে দুই জন রোগীকে এবং ফ্লোরেও তীব্র গরমের মধ্যে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। ঈদের ছুটির কারণে ৩য় তলার ১৯ শয্যার ওয়ার্ডটিও বন্ধ রয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ডাক্তার দেখা গেলেও ওয়ার্ডে নার্স ছাড়া কোন ডাক্তার পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রিতা ও দিপ্তী বিশ্বাস জানান, ঈদের দিন থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত হঠাৎ করেই ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। ঈদের ছুটির কারণে ৩য় তলার ১৯ শয্যার ওয়ার্ড বন্ধ। সোমবার চালু হবে। ২য় তলার দুটি ওয়ার্ডে সকল বেডে রোগী ভর্তি আছে। এমনকি এক বেডে দু’জন রোগীও রয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র বলেন, ‘রমজান মাসের রোজা রাখি। হঠাৎ রবিবার সকাল থেকে পেটের ব্যথা ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। হাসপাতালে যোগাযোগ করে পরামর্শ নিয়ে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছি। আমার বড় বোনও অসুস্থ হয়ে শনিবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে স্যালাইন ও চিকিৎসা নেওয়ার পরে সুস্থ হয়ে বাড়িতে এসেছে।’
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আসমা খান বলেন, ‘রোজার পর তীব্র গরম ও হাই প্রোটিন খাওয়ার জন্য ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে।’
হাসপাতালের শয্যা সংকটের বিষয়ে ডা. আসমা জানান, যে ওয়ার্ডটি বন্ধ রয়েছে, তা খুলে দেওয়া হবে।