১২০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধারের পর মাদক বানিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে সাতক্ষীরার সাবেক পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। গত ১৮ মে (বুধবার) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন থেকে জানা গেছে, সিলেট রিজিয়নের ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত আলতাফ হোসেন সাতক্ষীরায় পুলিশ সুপার থাকাকালে পাটকেলঘাটা থানা এলাকায় চোরাকারবারি বিপ্লব চ্যাটার্জির কাছ ১২০ ভরি স্বর্ণ স্বর্ণ করার ঘটনায় মাদক মামলা রেকর্ড করা হয়। বিষয়টি জানার পরও দায়ীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়া এবং এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে মিথ্যা প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ অধিদপ্তর প্রস্তাব করে। এর প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৯ জুলাই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী পাঠানো হয়। এর পর ওই বছরের ৪ আগস্ট তিনি ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণীর জবাব দেন। একই বছরের ২১ অক্টোবর তিনি ব্যক্তিগত শুনানিতে উপস্থিত হন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ওই ঘটনায় থানায় স্বর্ণ চোরাচালানের মামলা রেকর্ড না হয়ে মাদক মামলা রেকর্ড হয়। স্বর্ণ উদ্ধারের ঘটনাটিকে মাদক উদ্ধারের ঘটনায় সাজানোর বিষয়টি জানা সত্ত্বেও দায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেননি আলতাফ হোসেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনাটি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া যায়। পরে ২০১৯ সালে আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। এরপর তার ব্যাখ্যাও নেওয়া হয়। পরে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আতাউল কিবরিয়া এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করেন। সেখানে আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়। পরে দ্বিতীয় দফায় আলতাফ হোসেনের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।
আলতাফ হোসেনের জবাব পর্যালোচনা করে তাকে চাকরি থেকে অপসারণের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের মতামত নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আলতাফ হোসেনের চাকরিচ্যুতির ওই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর (খ) অনুযায়ী আনা ‘অসদাচরণের’ অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এই বিধিমালার ৪(৩) গ বিধি মোতাবেক গুরুতর দণ্ড হিসেবে প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ থেকে পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো।