খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে থোকায় থোকায় ঝুলছে গাঢ় হলুদ বর্ণের কমলা। আকারে ছোট হলেও এ কমলা বেশ সুমিষ্ট। ছোট গোলাকার কমলা। ঝোপালা গাছে পাতার চেয়ে যেন ফল বেশি। পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে এটি চাষ করা হয়েছে। পুরো বাগানজুড়ে ছোট ছোট গাছের শাখায় শাখায় নতুন জাতের এই কমলা।
৫ বছর আগে খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণায় এই জাতের উদ্ভাবন করে। এটি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। কেবল খেতেই সুস্বাদু নয়, এটি দেখতেও বেশ সুন্দর। বারি-২ এর মিষ্টতার পরিমাণ প্রায় ৯ শতাংশ। খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মাতৃবাগানে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।
খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আলতাফ হোসেন বলেন, “বারি কমলা -২ আমাদের দেশে যে চায়না কমলা আমদানী হয় তার মতোই। তবে এটার মূল বৈশিষ্ট্য হল এটি চায়নার কমলার চেয়ে মিষ্টি। গাছ প্রতি ফলনও বেশি। এটি আমাদের দেশের আবহাওয়া উপযোগী এবং দারুণভাবে উৎপাদনে সক্ষম। এটি চাষাবাদ করে আমাদের দেশের কৃষকেরা লাভবান হতে পারবে। এতে বিদেশ থেকে কমলা আমদানীর নির্ভরতাও কমবে।”
বারি কমলা -২ পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়াও সিলেটের পাহাড়ি অঞ্চলে চাষাবাদের উপযোগী। নিয়মিত ফলদানকারী উচ্চ ফলনশীল চাইনিজ জাতের কমলা কৃষকেরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষাবাদ করা গেলে পাহাড়ে কৃষিজ অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হতে পারে বলে জানান পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মালেক। তিনি বলেন, “বারি কমলা -২ অত্যন্ত উচ্চ ফলনশীল জাত। পুর্নবয়স্ক গাছে সবোর্চ্চ ৫০০ কমলা হয়। নভেম্বর মাসে কমলার রঙ আসলেও সংগ্রহ করতে হবে জানুয়ারি মাসের দিকে। ৩-৪ বছরে মধ্যে ফলন পাওয়া যায়। এছাড়া বারি কমলা -২ রোগ বালাই সহিষ্ণু।”
সম্ভাবনাময় বারি কমলা -২ এর বাণিজ্যিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চায় খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কিশোর কুমার মজুমদার বলেন, “বারি কমলা -২ খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষা কেন্দ্র উদ্ভাবন করেছে। ইতোমধ্যে আমরা তাদের কিছু চারা কলম নিয়ে এসেছি এবং এটার বংশ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আমরা দেখেছি এই কমলার মিষ্টিতা বেশি। কৃষক এই জাতের কমলা চাষের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা হটিকালচার থেকে কমল চারা তৈরি করে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করব। এর মাধ্যমে খাগড়াছড়িতে বারি কমলা -২ এর বাণিজ্যিক সম্ভাবণা তৈরি হবে।”