কাপ্তাইয়ের ফুটবল ইতিহাসে ৭০ দশক হতে ৯০ দশক পর্যন্ত মাঠ কাঁপিয়েছেন আসলাম খান। তিনি খেলেছেন ঢাকার স্বনামধন্য ক্লাব ভিক্টোরিয়া, ওয়ারী, ধানমন্ডী সহ চট্টগ্রামের মোহামেডান ক্লাবে। সর্বশেষ তিনি ১৯৯৩ সালে ভিক্টোরিয়া ক্লাবের হয়ে খেলেন এবেং ঐ ক্লাবে থাকাকালীন সময়ে ফুটবল খেলোয়াড় জীবনের ইতি টানেন। ৬৩ বছর বয়সী কাপ্তাইয়ের এই কৃতি খেলোয়াড় দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর পর আবার মাঠে নামেন। এছাড়া সাবেক জাতীয় দলের খেলোয়াড় কাপ্তাইয়ের সন্তান ডিফেন্ডার বিপ্লব মারমা সর্বশেষ ফরাশগঞ্জ হয়ে খেলেছেন ২০০০ সালে। তিনিও ২২ বছর পর আবারও মাঠে নামলেন।
এইছাড়া রাঙামাটির ফুটবল অঙ্গনের জনপ্রিয় মুখ সাবেক জাতীয় দলের কৃতি ফুটবলার কিংশুক চাকমা, রাঙামাটির কৃতি ফুটবলার আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য হাজী কামাল, ওয়াশিংটন চাকমা, রনবির চাকমা, কাপ্তাইয়ের সাবেক কৃতি ফুটবলার সন্তোষ দাশ, মংসিলা মারমা, জনি মারমা, বাবু খান, বাথুই মারমা, এই প্রজন্মের পিলু, ডিকসন, মাহাবুব হাসান বাবু, শাহআলম, আকিদ সহ এক ঝাঁক প্রবীন ও নবীন কৃতি ফুটবলার, অনেকে খেলা ছেড়েছেন গত ২০ হতে ৩০ বছর হলো। এইসব কৃতি ফুটবলারদের মিলন মেলা বসেছে কাপ্তাইয়ের কেপিএম ব্রিকফিল্ড মাঠে।
অনেকে প্রাণের টানে পুরানো সেই চিরচেনা মাঠে আবারও বুট পড়ে ফুটবল নিয়ে কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে গেলেন সেই সোনালী দিনে। প্রাক্তন এবং বর্তমান খেলোয়াড়দের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে চন্দ্রঘোনার কেপিএম ব্রিক ফিল্ড মাঠ।
সোনালী অতীত ক্লাব, কাপ্তাই এর আয়োজনে আজ শনিবার (২ এপ্রিল) বিকেল ৩ টায় কেপিএম ব্রিক ফিল্ড মাঠে অনুষ্ঠিত হয় সোনালী অতীত ক্লাব, কাপ্তাই বনাম রাঙ্গামাটি জেলা ফুটবল একাডেমি এর মধ্যে এক প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ। খেলায় ৩-০ গোলে বিজয়ী হন কাপ্তাই সোনালী অতীত ক্লাব। এই দলের হয়ে গোল করেন লোকাস ও সোহেল। সাবেক কৃতি ফুটবলার আসলাম খান এই দলের অধিনায়ক এর দায়িত্ব পালন করেন। অপরদিকে রাঙামাটি জেলা ফুটবল একাডেমির অধিনায়ক এর দায়িত্ব পালন করেন সাবেক খেলোয়াড় আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা হাজী কামাল। দুই দলে সর্বমোট ৪০ জন খেলোয়াড় অংশ নেন।
এই প্রীতি ফুটবল ম্যাচের অন্যতম আয়োজক কাপ্তাই উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং কাপ্তাই সোনালী অতীত ক্লাবের সভাপতি কৃতি ফুটবলার শাহাবুদ্দীন আজাদ জানান, মূলত নতুন প্রজন্মের নিকট সাবেক খেলোয়াড়দের পরিচয় এবং একটি মিলনমেলা করার উদ্যোশে এই আয়োজন।
কাপ্তাই উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বির্দশন বড়ুয়া ও যুগ্ম সম্পাদক মাহাবুব হাসান বাবু জানান, পুরানো খেলোয়াড়দের সম্মান জানানো এবং নতুনদের পরিচয় করার উদ্দেশ্যে এই প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন।
এই খেলায় রেফারির দায়িত্ব পালন করেন কাপ্তাইয়ের আর এক কৃতি ফুটবলার প্রভাত কুসুম বড়ুয়া, সহকারী ছিলেন শাহজালাল চৌধুরী ও তাজুল ইসলাম স্বপন। ধারা বর্ণনায় এমরান হোসেন ও বিজয় মারমা।
খেলা শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা এবং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান কেপিএম ব্রিকফিল্ড মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এইসময় রাঙামাটি জেলা পরিষদ সদস্য অংসুইছাইন চৌধুরী, কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুল হক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান, কেপিএম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সুদীপ মজুমদার, রাঙামাটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সভাপতি সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শফিউল আজম, চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ প্রবীর খিয়াং, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ১নং চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবী, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দিলদার হোসেন, কাপ্তাই সোনালী অতীত ক্লাবের সভাপতি ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দীন আজাদ, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক বির্দশন বড়ুয়া, কেপিএম সিবিএ সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু সহ প্রচুর ক্রীড়ামোদী দর্শক উপস্থিত ছিলেন।
এই সময় বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রবীন ক্রীড়া সংগঠক ও রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে কে কাপ্তাই সোনালী ক্লাবের পক্ষ হতে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এছাড়া রাঙামাটি জেলা ফুটবল একাডেমির পক্ষ হতে কাপ্তাইয়ের ৫ বিশিষ্ট জনকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।