জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯নং পার্বত্য রাঙামাটি আসনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে নৌকা প্রতীকে লড়ার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে সর্বমোট ১১টি মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন আগ্রহী প্রার্থীরা, সরকারের দায়িত্বশীল বিভিন্ন সংস্থা বিষয়টি নিশ্চিত করলেও মনোনয়ন ফরম বিতরণ কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসএম রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমন রাঙামাটি আসনে ১০টি ফরম বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দলীয় ও প্রশাসনিক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানাগেছে, মনোনয়ন সংগ্রহকারিরা হলেন, রাঙামাটির বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, স্থানীয় সরকার পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চিংকিউ রোয়াজা, আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী কামাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বরকল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সন্তোষ কুমার চাকমা, আওয়ামীলীগ নেতা সমরেশ দেওয়ান, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি জেলা আ’লীগ নেতা জয়সেন তঞ্চঙ্গ্যা, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ-রাঙামাটি জেলার সভাপতি অমর কুমার দে, অবসরপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন স্নেহ কান্তি চাকমা, জেলা আ’লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মতিন ও মোঃ জসিম উদ্দিন চৌধুরী।
দলীয় দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ১১টি মনোনয়নের মধ্যে ৯টি মনোনয়নপত্র দলীয় কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট্যরা জমা দিয়েছেন। তার মধ্যে জসিম উদ্দিন ও আব্দুল মতিনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়নি।
এদিকে এবারই প্রথমবারের মতো দীর্ঘদিন ক্ষমতার আসনে থাকা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অধীনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটির রাঙামাটি আসনে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য সর্বাধিক ১১টি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার ঘটনা পুরো জেলায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মাঝেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলেছে।
মনোনয়ন নিয়ে জানতে চাইলে রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা জানিয়েছেন, আমি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন কর্মী হিসেবে আমি দলীয় মনোনয়ন কামনায় আমি মনোনয়নপত্র কিনেছি।
সুদীর্ঘ দিন থেকেই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থেকে দলের কাজ করেছেন জানিয়ে নিখিল কুমার চাকমা বলেন, জাতির পিতার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের নির্বাচনী বোর্ড যদি দল থেকে আমাকে যোগ্য মনে করে দলীয় প্রতিকে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি নির্বাচন করবো। অন্যথায় দলের পক্ষ থেকে যাকেই মনোনয়ন দেয় তার পক্ষে তথা নৌকার পক্ষে আমি আমার সাধ্যনুসারে কাজ করবো।
অপরদিকে রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজ¦ী মূছা মাতব্বর জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পরবর্তী সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রথম প্রতিবাদকারি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক পরীক্ষিত নেতা হিসেবে রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি তথা বর্তমান সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারকে দল মনোনয়ন দিবে এবং আমরা তাকেই নৌকা প্রতিকে নির্বাচিত করে নেত্রীকে রাঙামাটি আসনটি উপহার দিবো।
এক প্রশ্নের জবাবে মূছা মাতব্বর বলেন, রাঙামাটির রাজনীতিতে দীপংকার তালুকদারের বিকল্প এখনো তৈরি হয়নি। সুতরাং অন্য যারাই মনোনয়ন পত্র কিনেছে তাদের উদ্দেশ্য হলো এই মনোনয়নপত্র কেনার কারনে তাদেরকে নেত্রী ডাকবে এবং নেত্রীর সাথে দেখা করবে, এবং সকলের সামনে সেখানে নিখিলকে সমর্থন করে নিজেরা প্রত্যাহার করে আসবে এই বাসনা থেকেই এমনটি করেছেন তারা। আসলে নেত্রীর কি এখন সেই সময় আছে?
এদিকে, মনোনয়নপত্র কিনার উৎসবে যোগ দিতে রাঙামাটি থেকে দলের অন্যান্য নেতাদের সাথে রাঙামাটি থেকে ঢাকায় যাওয়া জেলা আওয়ামীলীগের নতুন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাওয়াল উদ্দিন জানিয়েছেন, যোগদানকারি-অনুপ্রবেশকারিরা যারা আওয়ামীলীগের কোনো মিছিল-মিটিংয়ে থাকেনা, বিভিন্ন পদে থেকে চেয়ারহোল করে থেকে অনিয়ম দূর্নীতিতে দলকে ধ্বংসের দিকে ধাবিত করেছে। আমাদের রাঙামাটিতে দীপংকর তালুকদারই একমাত্র দলীয় প্রার্থী হিসেবে দল থেকে মনোনয়ন পাবে এবং আমরা তাকেই নির্বাচিত করে আনবো।