শনিবার ভোরে রাঙামাটি শহরের বনরূপা এলাকায় ছুরিকাঘাত করে যুবককে হত্যার ঘটনায় মাত্র ৫ ঘন্টা সময়ের মধ্যেই মূল হত্যাকারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনাস্থলের পাশের এলাকা থেকে বেলা সাড়ে ১১টার সময় ঘাতক যুবক সেলিম মাহমুদকে(৩৪) গ্রেফতার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ(বিপিএম-বার)।
শনিবার বিকেলে রাঙামাটিস্থ পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসপি জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশের উদ্বর্তন কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের পরিবারের সাথে কথা বলে বিস্তারিত জানার চেষ্ঠা করি। এরপর পুলিশ সদস্যদের চারটি টিমে ভাগ করে পুরো শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে বেলা সাড়ে এগারোটার সময় বনরূপা এলাকা থেকে মূল ঘাতক আসামীকে গ্রেফতার করতে পুলিশ সক্ষম হয়।
গ্রেফতারের পর তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার কথা স্বীকার করে পুলিশকে জানায়, পাওনা টাকা আদায় নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করে এজাজুল হক রাব্বীকে হত্যা করে সে। পুলিশ সুপার জানান, নিহত যুবক এজাজুল হক রাব্বী ২০২১ সালের একটি মাদক মামলার আসামী ছিলো।
মূলতঃ সেলিম মাহমুদের কাছ থেকে রাব্বী টাকা ধার নিয়ে সেগুলো ফেরত দেয়নি। শনিবার ভোররাতে রাব্বীর সাথে দেখা হলে তার টাকাগুলো ফেরত চায় সেলিম। এনিয়ে উভয়ে মারামারিতে লিপ্ত হয়। এসময় রাব্বীকে ছুরিকাঘাত করলে স্থানীয় দারোয়ান আমীর আলী তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে সেলিম তাকেও ছুরি দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমীর আলীকে হাসপাতালে নিয়ে যায় তার চাচা।
এদিকে বুকের বাম পাশে প্রচন্ড আঘাতে প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় ২৮ বছর বয়সী যুবক এজাজুল হক রাব্বী। সে বনরূপার ব্যবসায়ি মোজাম্মেল হকের দ্বিতীয় ছেলে বলে জানাগেছে। এই ঘটনায় গ্রেফতারকৃত সেলিম মাহমুদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
এদিকে, পর্যটন শহর রাঙামাটির অন্যতম প্রধান বানিজ্যিক এলাকা বনরূপায় এই ধরনের একটি নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনায় শহরবাসীর মধ্যে সৃষ্ট উৎকন্ঠার কথা নিজেই উপলব্দি করেছেন মন্তব্য করে রাঙামাটির পুলিশ সুপার বলেন, আমরা অন্যতম পর্যটন শহরে এই ধরনের ঘটনার সাথে সাথেই পুলিশের একাধিক টিমকে মাঠে নামিয়ে দিয়েছি।
আমি রাঙামাটিবাসীকে এই ধরনের পরিস্থিতিতে ধৈয্য ধারনের আহবান জানাচ্ছি এবং রাঙামাটির পুলিশ বাহিনীর উপর আস্থা রাখার অনুরোধ করছি। শীঘ্রই রাঙামাটিতে মাদক, কিশোর গ্যাংসহ বিভিন্ন অপরাধীদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কিছু অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ।