লংগদুতে জেএসএস (সন্তু) কর্তৃক ইউপিডিএফের এক সদস্য ও এক সমর্থককে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে ইউপিডিএফ রাঙামাটির সদর উপজেলার কুদুকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
আজ শনিবার (১৮ মে ২০২৪) বিকাল ৪টায় টায় অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে লংগদু হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে আগামী ২০ মে সোমবার রাঙামাটি জেলায় অর্ধদিবস (ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১২টা) সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সমাবেশে ইউপিডিএফ সংগঠক বাবলু চাকমার সভাপতিত্বে ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নিশি চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর কেন্দ্রীয় সহসাধারন সম্পাদক নিকন চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ধর্মশিং চাকমা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামের শাসন বিধি (১৯০০ সালের রেগুলেশন) বাতিল করার প্রচেষ্টার প্রতিবাদে ইউপিডিএফ যখন আন্দোলন গড়ে তুলেছে ঠিক সে সময় সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও আন্দোলন বানচাল করে দেয়ার জন্য সন্তু লারমা তার সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে লংগদুতে ইউপিডিএফ কর্মী বিদ্যাধন চাকমা ও সমর্থক ধন্যমনি চাকমাকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেছে।
সন্তু লারমা জুম্মো জনগণের স্বার্থের বিপরীতে গিয়ে সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, ‘৯৭ সালে চুক্তির নামে সন্তু লারমা জনগণের সাথে বেঈমানী করেছেন, এখন জনগণের পক্ষে যারা আন্দোলন করছেন তাদেরকে হত্যা করে সরকার-রাষ্ট্রীয় বাহিনীর এজেন্ডা বাস্তাবায়ন করছেন।
তারা সন্তু লারমাকে খুনি-সন্ত্রাসীদের গদফাদার আখ্যায়িত করে তাকে আঞ্চলিক পরিষদ থেকে অপসারণের দাবি জানান এবং সন্তু লারমার খুনের রাজনীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবেশ থেকে ইউপিডিএফ সংগঠক বাবলু চাকমা লংগদুর বড় হাড়িকাবায় ইউপিডিএফের কর্মী ও সমর্থক হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আগামী ২০ মে ২০২৪, সোমবার রাঙামাটি জেলায় ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অর্ধদিবস সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন এবং অবরোধ সফল করতে জেলাবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, আজ (শনিবার) সকাল সাড়ে ৮টার সময় লংগদুর বড়হাড়িকাবার ভালেদি ঘাট এর পার্শ্ববর্তী স্থানে সন্তু গ্রুপের ৭ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী সাংগঠনিক কাজে নিয়োজিত ইউপিডিএফ কর্মীদের উপর হামলা চালায়। এ হামলায় ঘটনাস্থলে ইউপিডিএফ সদস্য বিদ্যা ধন চাকমা ওরফে তিলক (৪৫) ও সমর্থক ধন্য মনি চাকমা (৩৫) ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
নিহত ইউপিডিএফ সদস্য বিদ্যাধন চাকমা কাট্টলীর কুকিছড়া গ্রামের সময় মনি চাকমার ছেলে ও সমর্থক ধন্য মনি চাকমা বড়হাড়িকাবা গ্রামের লেংগ্যা চাকমার ছেলে।
উক্ত হামলায় নেতৃত্ব দেন পোয়া চাকমা ওরফে আপন (৩২), পিতা লক্ষ্মী মনি চাকমা। তার বাড়ি বড় হাড়িকাবার পাশে কুট্টছড়ি গ্রামে।
ইউপিডিএফ এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে এবং খুনিদের গ্রেফতার, শাস্তিসহ সন্তু লারমাকে আঞ্চলিক পরিষদ থেকে অপসারণ করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।