নড়াইল সদর উপজেলায় গরুচোর সন্দেহে পিটুনিতে তিনজন নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার তুলারামপুরে যশোর-নড়াইল মহাসড়কের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তিনজনের কাছে থাকা মুঠোফোন থেকে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। তাঁদের তথ্য অনুযায়ী, একজনের নাম নূরনবী, আরেকজনের নাম দুলাল। তাঁদের দুজনের বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায়। নিহত অন্যজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তবে পুলিশ নিহত তিনজনের নাম-পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি।
খবর পেয়ে আজ বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান নড়াইল সদর থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাস্থলে এসে তিনজনের লাশ পেয়েছি। স্থানীয় লোকজনের কাছে শুনেছি, গরু চুরি করার সময় স্থানীয় লোকজন তাঁদের ধরে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলেছেন। লাশের ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ওসি সাজেদুল ইসলাম আরও বলেন, নিহত তিনজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তাঁদের কাছ থেকে দুটি মুঠোফোন পাওয়া গেছে। সেগুলো লক হয়ে আছে। তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে তুলারামপুর এলাকায় গরু চুরি হচ্ছে। সম্প্রতি চোরের দৌরাত্ম্য আরও বেড়েছে। এ জন্য এলাকাবাসী রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। গতকাল রাত ৩টার দিকে তুলারামপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য হান্নান তরফদারের বাড়িতে গরু চুরির চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি টের পেয়ে হান্নান প্রতিবেশীদের মুঠোফোনে জানান। তখন আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন এবং মসজিদে মাইকিং করা হয়। স্থানীয় লোকজন চোর চক্রের সদস্যদের ধাওয়া করে তিনজনকে আটক করেন। অন্য একজন পালিয়ে যান। পরে বিক্ষুব্ধ লোকজনের পিটুনিতে ঘটনাস্থলে তিনজনের মৃত্যু হয়।
বাবু কাজী নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে তুলারামপুর ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়কের পাশের বাড়িগুলো থেকে গরু চুরি হচ্ছিল। এলাকায় চোর ধরার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। চোরদের ধরার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছিল। তবে ধাওয়া করলেই তারা পালিয়ে যেত। গতকাল রাতে গরু চুরির সময় তিনজনকে ধরা হয় এবং স্থানীয় লোকজন তাঁদের গণপিটুনি দেন।