‘হাতি আপনাদের মেহমান, ফসল খেলেও ক্ষতি করবেন না’
সিএইচটি টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : 03-12-2025
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

‘হাতি আপনাদের মেহমান। মেহমান এসে ফসল খেয়ে ফেললেও তাদের কোনো ক্ষতি করবেন না। সরকার আপনাদের ফসলের ক্ষতিপূরণ দেবে। কেউ যেন হাতির ক্ষতি না করে।’

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বন্য হাতি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে সরকারি ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন বন বিভাগের বাঁশখালীর জলদি রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ।

 

আজ বুধবার সকালে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে চেক বিতরণ উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আনোয়ারা বন বিভাগের দায়িত্বে থাকা বাঁশখালীর জলদির রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আনোয়ারা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার। উপস্থিত ছিলেন রেঞ্জ অফিসার মাজহারুল ইসলাম ও মো. ফোরকান মিয়াসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

অনুষ্ঠানে ১১ জন ক্ষতিগ্রস্তকে ৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। পরে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আইন ও বিধিমালা–সম্পর্কিত দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

 

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় লোকালয়ে প্রায়ই হাতির পাল আক্রমণ করে। গত ২২ মার্চ বন্য হাতির আক্রমণে তিন মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর পর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় লোকালয়ে প্রায়ই হাতির পাল আক্রমণ করে। গত ২২ মার্চ বন্য হাতির আক্রমণে তিন মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর পর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রাফাইল ছবি

ক্ষতিপূরণ নিতে আসা আনোয়ারার বৈরাগ ইউনিয়নের উত্তর গুয়াপঞ্চক এলাকার আবু বক্কর প্রথম আলোকে বলেন, তিনি হাতির আক্রমণে আহত হন। এ জন্য এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। তাঁর এলাকায় প্রায় হাতি হানা দেয়। এক রাতে ঘর থেকে বের হয়েই হাতির সামনে পড়েন তিনি। তখন হাতির আক্রমণে আমি আহত হন।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় নিয়মিত হানা দেয় হাতি। ২০১৮ সালের সালের ১৩ জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত ছয় বছরে এই দুই উপজেলায় হাতির আক্রমণে ১৯ জন নিহত হয়েছেন। সর্বশেষ এ বছরের ২২ মার্চ মো. আরমান জাওয়াদ নামের এক শিশু নিহত হয়।

বন বিভাগ বলছে, হাতির আবাসস্থল ধ্বংস, চলাচলের পথ নষ্ট, বনভূমি উজাড় ও খাদ্যসংকটের কারণে হাতিরা বাধ্য হয়ে লোকালয়ে আসছে। এর আগে বন বিভাগের উদ্যোগে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনের একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে হাতির লোকালয়ে হানা দেওয়া বন্ধ হয়নি। হাতির আক্রমণে মানুষ যেমন প্রাণ হারিয়েছে, তেমনি মানুষের পাতা বৈদ্যুতিক ফাঁদেও হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

শেয়ার করুন