মাগুরায় আট বছরের একটা শিশুর সঙ্গে তার আপনজনেরা যে আচরণ করেছে, বিশ্বাসে ছুরিকাঘাত করেছে, এটা গোটা মানবতার ওপর তারা ছুরিকাঘাত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, এটি হচ্ছে পশুত্বের শিক্ষা।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘এই শিক্ষা থেকে বের করে এনে আমরা দিতে চাই আল্লাহর দেওয়া মানবিক শিক্ষা। এখানে আমাদের কোনো সংকীর্ণতা নেই। এ ব্যাপারে আমরা ভেরি ডেসপারেট।’
আজ রোববার দুপুরে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন কর্তৃক আয়োজিত শিক্ষক প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
মাগুরার ঘটনাকে ইঙ্গিত করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘এই সমাজে পাশবিক হৃদয়বিদারক অনেক দৃশ্য দেখতে হয়, শুনতে হয়। হৃদয় ভেঙে টুকরা টুকরা হয়ে যায়।’
সম্মেলনে জামায়াতের আমির বলেন, ‘৯১ ভাগ মুসলমানের দেশে অবশ্যই শিক্ষা হতে হবে ধর্মের ভিত্তি এবং চেতনাকে ধারণ করে। এর বাইরে কোনো শিক্ষা মানুষকে মানুষ বানাতে পারবে না। দেশপ্রেমিক দায়িত্বশীল নাগরিক বানাতে পারবে না, যা এখন প্রমাণিত সত্য।’
জনগণের সমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে প্রথমে শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার করবেন বলে সম্মেলনে জানান জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ যদি কোনো দিন দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেন, কবুল করেন, এটা আল্লাহর ইচ্ছা। জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে যদি আমরা যাই (ক্ষমতায়), তাহলে আমাদের প্রথম দায়িত্ব হবে শিক্ষার সংস্কার সাধন করা।’
জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘শিক্ষককে শিক্ষকের মর্যাদার আসনে বসানো, আর ছাত্রদের দেশ গড়ার কারিগর হিসেবে তৈরি করা। যাতে একজন ছাত্রের হাতে তাঁর শিক্ষার পাঠ চোকানোর পর যেভাবে কাগজের সার্টিফিকেট আসবে, ঠিক সেভাবে আসবে কাজের অফার লেটার। এই দুইটা একসঙ্গে তাঁর হাতে পৌঁছাবে। এমনকি তার গ্র্যাজুয়েশন অথবা পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন সার্টিফিকেট আসার আগেই দুনিয়ায় বহু জায়গায় ছাত্রদের কাছে কাজের অফার লেটার চলে আসে। আমরা নৈতিক শিক্ষাকে বিকশিত করে ওই শিক্ষাই এ দেশে প্রতিষ্ঠিত করব। তাহলে মানুষগুলো আর পশু হবে না।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ও বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি প্রফেসর ড. এম কোরবান আলী। সঞ্চালনায় ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেট সদস্য ও বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক এ বি এম ফজলুল করিম।