টানা দরপতনের পর বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ছে। চলতি সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবসে এরই মধ্যে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২০ ডলারের ওপরে বেড়ে গেছে। এর আগে এক মাস ধরে টানা দরপতন হয় সোনার। এতে এক মাসের মধ্যে প্রতি আউন্স সোনার দাম ১৩৫ ডলার কমে যায়।
বিশ্ববাজারে টানা দরপতনের মধ্যে সম্প্রতি দেশের বাজারে দু’দফায় সোনার দাম কমানো হয়েছে। অবশ্য তার আগে টানা ছয় দফা দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হয়। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দেশের বাজারে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে পৌঁছায় সোনা।
চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি দাম বাড়ার মাধ্যমে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয় ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা। এর আগে কখনো দেশের বাজারে সোনার ভরি ৯৩ হাজার টাকা স্পর্শ করেনি। রেকর্ড দাম হওয়ার পর ফেব্রুয়ারিতে দু’দফা সোনার দাম কিছুটা কমানো হয়।
সর্বশেষ ২৬ ফেব্রুয়ারি সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমিয়ে ৯১ হাজার ৯৬ টাকা করা হয়েছে।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৫০ টাকা কমিয়ে ৮৭ হাজার ১৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৮৭৫ টাকা কমিয়ে ৭৪ হাজার ৫৯১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ভরিতে ৬৯৮ টাকা কমিয়ে ৬২ হাজার ১৬৯ টাকা করা হয়েছে।
দেশের বাজারে সোনার এই দাম কমানোর পর বিশ্ববাজারে দাম বাড়তে দেখা যাচ্ছে। দেশের বাজারে সোনার দাম যখন কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয় সে সময় বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিলো ১ হাজার ৮১০ ডলার।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বুধবার (১ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৫ মিনিটে প্রতি আউন্স সোনার দাম দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৩৩ ডলারে। অর্থাৎ দেশের বাজারে দাম কমানোর পর বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২৩ ডলার বেড়ে গেছে।
সোনার দামের বিশ্ববাজারের চিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছরের শুরুতে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিলো ১ হাজার ৮২৪ ডলার। নতুন বছর ২০২৩ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দফায় দফায় সোনার দাম বাড়ে। এতে ফেব্রুয়ারির প্রথমদিন প্রতি আউন্স সোনার দাম ১ হাজার ৯৫০ ডলারে উঠে যায়। এরপর থেকেই সোনার দাম কমতে শুরু করে। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে প্রতি আউন্স সোনার দাম দাঁড়ায় ১ হাজার ৮১০ ডলার।
বিশ্ববাজারে দাম বাড়তে থাকায় চলতি বছর দেশের বাজারে প্রথম সোনার দাম পুনঃনির্ধারণ করা হয় ৮ জানুয়ারি। সে সময় সব থেকে ভালো মানের বা বা ২২ ক্যারেট (১১.৬৬৪ গ্রাম) এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৩৩৩ টাকা বাড়িয়ে ৯০ হাজার ৭৪৬ টাকা করা হয়।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ২ হাজার ২১৬ টাকা বাড়িয়ে ৮৬ হাজার ৬০৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৯২৪ টাকা বাড়িয়ে ৭৪ হাজার ২৪১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৫৭৫ টাকা বাড়িয়ে ৬১ হাজার ৮৭৮ টাকা করা হয়।
এরপর ১৫ জানুয়ারি আর এক দফা সোনার দাম বাড়ানো হয়। সে সময় সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেট এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৬৮৩ টাকা বাড়িয়ে ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা করা হয়।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৫৬৬ টাকা বাড়িয়ে ৮৯ হাজার ১৭১ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ২ হাজার ২১৭ টাকা বাড়িয়ে ৭৬ হাজার ৪৫৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৮০৭ টাকা বাড়িয়ে ৬৩ হাজার ৬৮৫ টাকা করা হয়।
এতে দেশের বাজারে প্রথমবারের মতো এক ভরি সোনার দাম ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা করা হয়। এই রেকর্ড দামের পর ফেব্রুয়ারি মাসের ৫ তারিখ দেশের বাজারে সোনার দাম কিছুটা কমানো হয়। সে সময় সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ১৬৭ টাকা কমিয়ে ৯২ হাজার ২৬২ টাকা করা হয়।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ১০৮ টাকা কমিয়ে ৮৮ হাজার ৬৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৯২ টাকা কমিয়ে ৭৫ হাজার ৪৬৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ভরিতে ৮১৬ টাকা কমিয়ে ৬২ হাজার ৮৬৭ টাকা করা হয়।