মিয়ানমারে লড়াইরত সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর আক্রমণে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের পশ্চিমে সরকারি বাহিনীর আরেকটি বড় ঘাঁটির পতন হয়েছে।
আজ সোমবার ওই ঘাঁটির পতনের পর সেখান থেকে কয়েক শ জান্তা সেনাকে জিম্মি করেছে আরাকান আর্মি। দেশটির সামরিক বাহিনীর জন্য একে আরেকটি বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।
গত বছরের নভেম্বর থেকে রাখাইনে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ জোরদার হয়ে উঠেছে। ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জান্তা বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে আরাকান আর্মির সঙ্গে তাদের যুদ্ধবিরতি ছিল। কিন্তু নভেম্বর থেকে সেই যুদ্ধবিরতি ভেঙে যায়।
জান্তা বাহিনী এখনো রাজধানী সিত্তের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে। তবে আরাকান আর্মি ইতিমধ্যে রাজধানীর আশপাশের এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
আরাকান আর্মির প্রকাশ করা এক ভিডিওতে বলা হয়েছে, রাজধানী সিত্তে থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে বুথিডং শহর এলাকার মিলিটারি অপারেশনস কমান্ড ১৫ ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আরাকান আর্মি। তবে কখন এটি নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হয়েছে, তার সময় উল্লেখ করা হয়নি।
স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, কয়েক দিন ধরে সেখানে লড়াই চলছিল। সেখানে চূড়ান্ত হামলা শুরুর পর জান্তা সেনারা পরাজয় মেনে নিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে।
এর আগে ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইন রাজ্যে দেশটির সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিজিপির একটি বড় ঘাঁটি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। শুক্রবার মংডু শহরতলিতে বিজিপির সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। শহরটিতেও ঢুকে পড়েছেন আরাকান আর্মির সদস্যরা।
আরাকান আর্মির সদস্যরা বৃহস্পতিবার বিজিপির কিয়ে কান পিন বর্ডার গার্ড পুলিশ সদর দপ্তরে আক্রমণ করেন। মিয়ানমার সরকারের পুলিশ ও সেনাসদস্যরা তাঁদের প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। কিন্তু হামলার মুখে টিকতে না পেরে একপর্যায়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।
কিয়ে কান পিন গ্রামটি মংডুর ১২ কিলোমিটার উত্তরে। সেখানকার ঘাঁটিটি আরাকান আর্মির হাতে পতন হওয়ার আগে জান্তা সরকার হেলিকপ্টারে করে কমান্ডারদের উদ্ধার করে। অবশ্য মংডু শহরের পূর্ব দিকের দুটি তল্লাশিচৌকি এখনো জান্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
রাখাইনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অন্তত ৫০ সেনা আরাকান আর্মির কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।