ছেলে ব্যারনকে ভর্তি করায়নি বলেই কি হার্ভার্ডের ওপর এমন ক্ষিপ্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প
সিএইচটি টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : 28-05-2025
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প তাঁর ছেলেকে ঘিরে অনলাইন–দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছেন। ওই তত্ত্বে বলা হচ্ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মেলানিয়ার ছেলে ব্যারন ট্রাম্প হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। তবে গতকাল মঙ্গলবার মেলানিয়ার মুখপাত্র এই দাবিকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন।

মেলানিয়ার যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক নিকোলাস ক্লেমেন্স বলেন, ‘ব্যারন হার্ভার্ডে আবেদন করেননি। তিনি নিজে কিংবা তাঁর হয়ে কারও আবেদন করার দাবিও পুরোপুরি মিথ্যা।’

১৯ বছর বয়সী ব্যারনের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক জল্পনাকল্পনা চলছিল। বিশেষ করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে তাঁর বাবা ডোনাল্ড ট্রাম্পের বারবার আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া এবং আইভি লিগভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর তহবিল বাতিল নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এ গুঞ্জন তৈরি হয়।

 

 

গতকাল মঙ্গলবার ট্রাম্প হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও ১০ কোটি ডলার অনুদান বাতিল করেছেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ট্রাম্প এ পর্যন্ত ৩০০ কোটি ডলারেরও বেশি মূল্যের অনুদান ও সরকারি চুক্তি বাতিল করেছেন।

এই তহবিল বাতিল এবং ম্যাসাচুসেটসের ক্যামব্রিজে অবস্থিত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একাধিক আইনি চ্যালেঞ্জ নেওয়া হয়েছে।

১৯ বছর বয়সী ব্যারনের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক জল্পনাকল্পনা চলছিল। বিশেষ করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে তাঁর বাবা ডোনাল্ড ট্রাম্পের বারবার আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া এবং আইভি লিগ ভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর তহবিল বাতিল নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এ গুঞ্জন তৈরি হয়।

ব্যারন ট্রাম্প চলতি মাসের শুরুতে নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর প্রথম বর্ষের পড়া শেষ করেছেন। এর আগে তিনি ২০২৪ সালে ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচে অবস্থিত অক্সব্রিজ একাডেমি থেকে পড়াশোনা শেষ করেন।

গত মার্চে ফক্স নিউজের লরা ইনগ্রাহামের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ব্যারন রাজনীতি নাকি ব্যবসা—কোনটিতে ভালো করবেন। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘ওর প্রযুক্তিতে অসাধারণ দক্ষতা আছে। ব্যারন খুবই বুদ্ধিমান ছেলে।’

এর আগে নিউইয়র্ক পোস্টকে ট্রাম্প বলেছিলেন, একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যারনকে ভর্তি হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে তিনি সেসব প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করেননি।

মেলানিয়া ট্রাম্পের দপ্তর থেকে বলা হচ্ছে, ব্যারন হার্ভার্ডে আবেদনই করেননি।

 

ব্যারন ট্রাম্প

ব্যারন ট্রাম্পছবি: রয়টার্স ফাইল ছবি

৬ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার ব্যারন রাজনীতির প্রতিও আগ্রহ দেখিয়েছেন। ২০২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার চলাকালে বাবার সঙ্গে বিভিন্ন সভা ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন ব্যারন।

গত বছর ফিলাডেলফিয়ার ‘টক রেডিও ১২১০ ডব্লিউপিএইচটি’-তে প্রচারিত ‘কায়াল অ্যান্ড কোম্পানি’ অনুষ্ঠানে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘ও একটু লম্বা। বলতে পারি, সে লম্বা মানুষদের একজন। তবে সে সুদর্শন। খুব ভালো ছাত্রও। আর তার রাজনীতি পছন্দ। ব্যাপারটা একটু মজারও বটে।’

ব্যারন তাঁর বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করছেন। তিনি নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টার্ন স্কুল অব বিজনেস থেকে ব্যবসা প্রশাসনে ডিগ্রি নিচ্ছেন। ২০২৮ সালে তাঁর স্নাতক শেষ হওয়ার কথা।

গতকাল মঙ্গলবার ট্রাম্প হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও ১০ কোটি ডলার অনুদান বাতিল করেছেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ট্রাম্প এ পর্যন্ত ৩০০ কোটি ডলারেরও বেশি মূল্যের অনুদান ও সরকারি চুক্তি বাতিল করেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯৬৮ সালে ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার হোয়ার্টন স্কুল থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর বড় ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র ২০০০ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতক হন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্পও ২০০৪ সালে একই পথ অনুসরণ করেন।

ইভাঙ্কা ট্রাম্প মূলত জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাকডোনা স্কুল অব বিজনেসে পড়াশোনা করেছেন। তাঁর বাবা ডোনাল্ড ট্রাম্পও শুরুতে নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে অবস্থিত ফোর্ডহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন।

ট্রাম্পের আরেক ছেলে এরিক ট্রাম্প ২০০৬ সালে ম্যাকডোনা থেকে ফাইন্যান্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। আর ট্রাম্পের মেয়ে টিফানি ২০২০ সালে জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন। এর চার বছর আগে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছিলেন তিনি।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যারনের ভর্তি না হতে পারার বিষয়ে আসলে কী হয়েছিল—এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেছিল রয়টার্স। তবে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া পাওয়া যায়নি।


 

শেয়ার করুন