ইসরায়েল ও তুরস্কের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক দেশ দুটির মধ্যকার কূটনৈতিক টানাপোড়েনেও টিকে ছিল। কয়েক দশক ধরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চলছে এবং এখন তা বছরে শতকোটি ডলারের ঘরে পৌঁছেছে। তবে গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের যে অবনতি হয়েছে, তার ফলে বাণিজ্য সম্পর্ক আর টিকবে না বলে আশঙ্কা করছেন ইসরায়েলিরা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তুরস্ক চলতি মাসে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য স্থগিত করেছে। আঙ্কারা জানিয়েছে, যুদ্ধ শেষ না হওয়া ও বিনা বাধায় গাজায় ত্রাণ না যাওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ থাকবে। ইসরায়েল বলেছে, তুরস্কের এই পদক্ষেপ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়মনীতির লঙ্ঘন।
বাণিজ্য বন্ধে তুরস্কের নেওয়া সিদ্ধান্তের পর ইসরায়েলি আমদানিকারকেরা এখন হন্যে হয়ে বিকল্প আমদানি উৎস খুঁজছেন। এসব আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে সিমেন্ট থেকে খাদ্য, এমনকি গাড়িও। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, তুরস্ক থেকে এসব পণ্য না আসার কারণে ইসরায়েলে এগুলোর ঘাটতি হবে। তবে তা ইসরায়েলের ৫০০ বিলিয়ন (৫০ হাজার কোটি) ডলারের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, তা হয়তো নয়।
ইসরায়েলের অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ শমুয়েল আবরামজন বলেন, ‘তুরস্ক ইসরায়েলের উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য অংশীদার। কিন্তু আমরা পুরোপুরিভাবে তুরস্কের ওপর নির্ভর করি না। বিকল্প উৎস থেকে আমদানি হয়তো খরচ বাড়াবে, তবে তুরস্কের এই পদক্ষেপ ইসরায়েলি অর্থনীতিতে উল্লেখ করার মতো বা দীর্ঘমেয়াদি কোনো ঝামেলা তৈরি করবে না।’
এই অর্থনীতিবিদ বিশ্বাস করেন, ২০২৪ সালে ইসরায়েলে ১ দশমিক ৬ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে বলে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, প্রকৃত প্রবৃদ্ধি তাকে ছাড়িয়ে যাবে।
২০২৩ সালে দুই দেশের মধ্যে ৬২০ কোটি ডলারের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ২৩ শতাংশ কম। ইসরায়েলি পরিসংখ্যান থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। দ্বিপক্ষীয় এই বাণিজ্যের তিন-চতুর্থাংশ ইসরায়েলের আমদানি।