কোনো এলাকার বায়ুদূষণ পরিস্থিতি কতটা, তা আইকিউএয়ার মানসূচকে তুলে ধরা হয়। এই মান বা স্কোর ৩০০-এর ওপরে চলে গেলে সেই বায়ুকে দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়। চলতি মাসে ইতিমধ্যে একাধিকবার ঢাকার বায়ুর মান ৩০০–এর বেশি হয়ে গেছে। আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে স্কোর ছিল ২৯২। বায়ুর এই মানকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু গতকাল রোববার রাত ১১টা থেকে আজ সকাল ৭টা পর্যন্ত স্কোর কিন্তু ৩০০–এর বেশি ছিল।
নগরীর দূষণ নিয়ে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে স্কোর ছিল ৪৫৫। টানা প্রায় আট ঘণ্টা স্কোর ছিল ৩০০–এর বেশি। ঢাকার বায়ুর মান যে কতটা নাজুক, এই স্কোর তা তুলে ধরছে।
বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে।
আজ বিশ্বে বায়ুদূষণে ৩১৬ স্কোর নিয়ে শীর্ষ অবস্থানে আছে ভারতের দিল্লি।
আজ ঢাকার বায়ুর গড় মান ৩০০ না পেরোলেও নগরীর শীর্ষ দূষিত ১০ স্থানের মধ্যে ছয়টিতেই বায়ুর মান ৩০০ পার হয়ে গেছে।
আজ ঢাকা ও আশপাশের যেসব স্থানে দূষণ বেশি, এর মধ্যে প্রথম তিন স্থানের মধ্যে আছে গুলশান লেক পার্ক (৩৮৫), গুলশান-২ রব ভবন (৩৬৯) এবং ঢাকার মার্কিন দূতাবাস (৩৪৬)।
ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উপাদান হলো বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি। আজ ঢাকার বাতাসে এর উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানমাত্রার চেয়ে ৪৩ দশমিক ৫ গুণ বেশি।
ঢাকার বায়ুর আজ যে মান, তা যেকোনো মানুষের জন্যই ক্ষতিকর। এই দূষণ থেকে রক্ষা পেতে আইকিউএয়ারের পরামর্শ, ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। খোলা স্থানে ব্যায়াম করা যাবে না। আরও একটি পরামর্শ, ঘরের জানালা বন্ধ রাখতে হবে।
নগরীর দূষণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অন্তত তিনটি কাজ জরুরি ভিত্তিতে করতে হবে, এমন পরামর্শ দেন আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার। এর মধ্যে আছে নগরীতে যেকোনো ধরনের বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ করতে হবে, নির্মাণকাজ চলার সময় অবশ্যই প্রয়োজনীয় পানি দিতে হবে এবং দূষণকারী যানবাহনের চলাচল বন্ধ করতে হবে।