জামালপুরে এক শিক্ষানবিশ (ইন্টার্ন) চিকিৎসকের পোশাক পরিবর্তনের ভিডিও গোপনে ধারণের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ভিডিওটি ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে দেড় লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ১০ এপ্রিল জামালপুর সদর থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেছেন ওই নারী ইন্টার্ন চিকিৎসক। অভিযুক্ত চার আসামিকে ওই দিনই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ওই ইন্টার্ন চিকিৎসক বলেন, মামলার পর থেকে অভিযুক্তদের পরিবার বিভিন্নভাবে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের ওপর চাপ দিচ্ছেন মামলা তুলে নিতে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘মামলার পর থেকে অভিযুক্তদের পরিবার ও প্রভাবশালীরা বিভিন্নভাবে আমাকে চাপ দিচ্ছেন, মামলা তুলে নিতে হুমকিও দিচ্ছেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা পোশাক পরিবর্তনের ভিডিওটি অন্য কোথাও সংরক্ষণ করে থাকতে পারে। তাই ওই আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি করছি।’
এ ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার চারজন হলেন টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী এলাকার মো. নাইমুর রহমান ওরফে আংকন (২০), একই জেলার বিল কুকরির চর এলাকার ইমরুল হাসান ওরফে আলিফ (১৮), জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার কায়েতপাড়া এলাকার জাকারিয়া হোসেন ওরফে বেনজির (২৪) ও জামালপুর পৌর শহরের কাছারীপাড়া এলাকার আরাফাত হোসেন (২৩)। তাঁদের কাছ থেকে গোপনে ধারণ করা ভিডিও ও মুঠোফোন জব্দ করেছে পুলিশ। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আসামিদের মধ্যে আরাফাত ছাড়া বাকি সবাই হাসপাতালের নার্সদের সন্তান।
ওই নারী ইন্টার্ন চিকিৎসক প্রথম আলোকে বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কোয়ার্টারের কাছাকাছি নার্সদেরও একটি কোয়ার্টার আছে। কোয়ার্টারের ছাদ থেকে চার আসামি ভিডিও ধারণ করেন।
এদিকে আজ বুধবার বেলা একটার দিকে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ ও আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, এ ঘটনার পর অভিযুক্তদের বন্ধুবান্ধব ও পরিচিতজনেরা ‘ভিকটিম ব্লেমিং’ করছেন, ভুক্তভোগীকে হেনস্তা করছেন। ভুক্তভোগীকে প্রতিনিয়ত মামলা তুলে নিতে চাপ দেওয়া হয়েছে। ফলে ভুক্তভোগী জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। তাঁর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। অন্যথায় জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ঐক্যবদ্ধ করে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
গ্রেপ্তার আসামিদের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে জানিয়ে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘রিমান্ড মঞ্জুর হলে আসামিদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মামলা তুলে নিতে ওই নারীকে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি আমাদের জানোনো হয়নি। আমাদের কাছে বিষয়টি লিখিত আকারে দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’