নির্বাচন বর্জন করতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ‘গণতন্ত্রকামী ভোটারদের’ উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেছেন, ‘রাষ্ট্রের একজন নাগরিক হিসেবে যারা আপনাকে গত ১৫ বছর অধিকারবঞ্চিত করে রেখেছে, তাদের অন্তত ৭ জানুয়ারি এক দিন বয়কট (বর্জন) করুন।’
আজ শনিবার সন্ধ্যায় এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন। ভোটারদের আগামীকাল ভোটকেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত থেকে সারা দিন পরিবারকে সময় দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘আপনি, আপনার পরিবার, স্বজন-বন্ধুবান্ধব-পরিচিতজন ও প্রতিবেশীদের ভোটের নামে “বানর খেলার আসর” বর্জন এবং ভোটকেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত করুন।’
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, অভিনব মডেলের ‘ডামি নির্বাচনী’ নাটকের মাধ্যমে অবৈধভাবে আবারও ক্ষমতায় থাকতে এক বিপজ্জনক খেলার আয়োজন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে, বিশেষ করে গণতান্ত্রিক বিশ্বকে উপেক্ষা করে প্রকাশ্য তথাকথিত ভোটরঙ্গ বাংলাদেশকে নিয়ে যাচ্ছে ভয়ংকর বিপদের অতলে।
গতকাল শুক্রবার রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ড ও হতাহতের ঘটনাকে ‘নৃশংসতম, বর্বরোচিত ও ন্যক্কারজনক’ বলে উল্লেখ করেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার পরই আমি বিএনপির পক্ষ থেকে এ ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছি। প্রকৃত দোষীদের আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছি। ইতিমধ্যে রেলওয়ে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।’ তিনি বলেন, মহানগর ডিবি পুলিশের প্রধান সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, এ ঘটনায় নাকি বিএনপি নেতাদের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে ডিবি! অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতারা এ ঘটনায় বিএনপিকে দুষছেন। কী হাস্যকর বয়ান!
প্রতিটি নাশকতার ঘটনার পর বিএনপির ওপর দোষ চাপানো আওয়ামী লীগ ও তাদের দলীয় পুলিশ প্রশাসনের মজ্জাগত হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি বলেন, আগুন দিয়ে গাড়ি পোড়ানো, ট্রেনে আগুন, রেললাইন উপড়ানো, সহিংসতা, গানপাউডার ও লগি-বইঠা দিয়ে মানুষ হত্যার মূল হোতা আওয়ামী লীগ।
গত ৪৮ ঘণ্টায় সারা দেশে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর অন্তত ২৫৫ নেতা–কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন রুহুল কবির রিজভী। তাঁর দাবি, এই সময়ে ১৬টি মামলায় অজ্ঞাতপরিচয়সহ বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের অন্তত ১ হাজার ৩৫৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ৬০ জনের বেশি নেতা–কর্মী ৪৮ ঘণ্টায় সরকারি দলের নেতা–কর্মীদের হামলা–মারধরে আহত হয়েছেন।
রিজভী দাবি করেন, ১৫ নভেম্বর ‘একতরফা তফসিল’ ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলোর অন্তত ১৩ হাজার ১২১ নেতা–কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। এই সময়ে ৪৮৬টি মামলায় অজ্ঞাতপরিচয়সহ বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের অন্তত ৫১ হাজার ১৯৪ নেতা–কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া দলটির ১৫ জন নেতা–কর্মী নিহত ও ১ হাজার ৯৬৭ জন আহত হয়েছেন।