অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনাসংলগ্ন কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছেন ইশরাক হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সেখানে ট্রাকের ওপর স্থাপিত অস্থায়ী মঞ্চে উপস্থিত হয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন। পাশাপাশি আদালতের রায় দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকারকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আজ হাইকোর্টের রায় শোনার পর আমাদের দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আপাতত আমরা অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত রাখব। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করা হবে যে তারা (সরকার) কী করে। তাদের যে কর্মকাণ্ড, সেটার ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী কার্যক্রমের নির্দেশনা আসবে।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘একটা জিনিস স্পষ্ট বলতে চাই, রায়ের বিষয়, শপথের বিষয় আলাদা। আর এটা হয়ে যাওয়া মানে প্রথম যে দাবি করেছিলাম, ছাত্র প্রতিনিধিসহ অন্য প্রতিনিধিদের পদত্যাগ করতে হবে, সেটা কিন্তু পরিবর্তন হবে না। সেই দাবি সেই দাবির জায়গায় থাকবে।’
বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয় গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকেছবি: প্রথম আলো
ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয় গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। আজ তাঁরা রাজধানীর কাকরাইল মোড়, মৎস্য ভবন মোড় ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়ে ‘অবস্থান কর্মসূচি’ পালন করেন। তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবি জানান। এই কর্মসূচির কারণে আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় যানজট ছড়িয়ে পড়ে।
আদালতের রায়ের প্রসঙ্গে কাকরাইল মোড়ে ইশরাক বলেন, হাইকোর্টে একটি ভুয়া রিট করানোর মাধ্যমে সরকারের পক্ষ থেকে মেয়র পদে তাঁর শপথ গ্রহণ করাকে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছিল। শেষে আইনের শাসনের বিজয় হয়েছে। আইনের শাসনের প্রতিষ্ঠা হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আর কালক্ষেপণ না করে অবিলম্বে আদালতের রায় বাস্তবায়ন করবে বলে আশা করেন ইশরাক। যদি আবারও টালবাহানা করে এ সরকার, তাহলে আগামীকাল সকালেই আবার এখানে এসে ঘেরাও করা হবে।
বিএনপির এই নেতা তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম জনদুর্ভোগ তৈরি হওয়ায় ঢাকার সাধারণ মানুষের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের পরিকল্পনার অংশ ছিল না। বর্তমান সরকার আমাদের অধিকারবঞ্চিত করতে গিয়ে এমন পর্যায়ে নিয়ে যায়। বাধ্য হয়ে এ ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হয়।’
বর্তমান সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলম পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এ আন্দোলন চলমান থাকবে বলেও ইশরাক জানান।
আনুষ্ঠানিক ঘোষণা শেষে জুলাই আন্দোলনে আহত কয়েকজনকে ট্রাকের ওপর স্থাপিত অস্থায়ী মঞ্চে ওঠানো হয়। সেখানে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায় ও এলাকার নেতারা বক্তব্য দেন। বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে ইশরাক কাকরাইল থেকে চলে যান। এরপর নেতা-কর্মীরাও চলে যেতে শুরু করেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরের অন্যতম ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়।