চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে কর্মরত অবস্থায় মোহাম্মদ রুহল আমীন নিজের পদবি গোপন করে নিজের ও স্ত্রীর নামে বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার-২০২২–এর জন্য আবেদন করেছিলেন। পুরস্কার প্রদানসংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সভাপতি হিসেবে তিনি সেই আবেদন জেলা ও বিভাগীয় কমিটির কাছে সুপারিশও করেছিলেন। এ ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় ‘অসদাচরণের’ দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে ‘তিরস্কার’সূচক লঘুদণ্ড দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
মোহাম্মদ রুহল আমীন এখন বাংলাদেশ চা বোর্ড, চট্টগ্রামে সচিব (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
রুহল আমীনকে লঘুদণ্ড দিয়ে আজ মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরীর ৩ এপ্রিল সই করা ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রুহল আমীন ২০২২ সালের ৫ জুন অনুষ্ঠিত বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ ও বৃক্ষমেলার প্রাক্কালে হীন ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল না হওয়ায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের যথাযথ ও আইনসম্মত কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। এর মাধ্যমে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, রুহল আমীনের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮–এর ৩(খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তবে তিনি বেশ কয়েকটি বাগান সৃজন করে জনস্বার্থের জন্য ইতিবাচক কাজ করেছেন বিধায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হলেও তাঁকে সর্বনিম্ন দণ্ড ‘তিরস্কার’ দণ্ড প্রদান করা সমীচীন বলে প্রতীয়মান হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রুহল আমীন বলেন, ‘আমি সরকারি চাকরিজীবী। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না।’
অনিয়ম করে লঘুদণ্ড পাওয়ার ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। ‘পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ’ ও ‘অসদাচরণের’ অভিযোগ প্রমাণিত হলে গত বছরের ২৩ জানুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়জুন্নেছা আক্তার লঘুদণ্ড পেয়েছিলেন। শাস্তি দেওয়ার ছয় মাস না যেতেই ১ আগস্ট ‘নবীন কর্মকর্তা’ বিবেচনায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ক্ষমা (অব্যাহতি) পান তিনি।
একসময় আলোড়ন সৃষ্টিকারী কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন সাংবাদিক নির্যাতন করেও প্রভাব খাটিয়ে শাস্তি থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।