বিশ্ব ইজতেমা প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে আগামী শুক্রবার। কহরদরিয়া খ্যাত টঙ্গীর তুরাগ তীরে ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ইজতেমা ময়দান। ইজতেমায় অংশ নিতে এরই মধ্যে ময়দানে আসতে শুরু করেছেন দেশ ও বিদেশের মুসল্লিরা।
ইজতেমার মিডিয়ার সমন্বয়কারী মুরুব্বি জহির ইবনে মুসলিম বলেন, ১৬০ একর জায়গার বিশাল ময়দানে শামিয়ানা টানানোর কাজ শেষ। বৈদ্যুতিক বাতি, মাইক, জেনারেটর সংযোগ, পানি সরবরাহ ব্যবস্থাসহ আনুষঙ্গিক কাজও শেষ হয়েছে। শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
তবে বুধবার সকাল থেকেই ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তাবলিগ জামাতের মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেছেন। অবস্থান নিয়েছেন তাদের নিজ নিজ খিত্তায়। আগত মুসল্লিদের সুবিধার্থে ৫ জোড়া বিশেষ ট্রেন ও বিআরটিসি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ময়দানের পশ্চিম পাশে তুরাগ নদীর পূর্ব পাড়ে নামাজের মিম্বার এবং উত্তর- পশ্চিম দিকে বিদেশি মেহমানদের জন্য নির্ধারিত কামরার পাশে মূল বয়ান মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও বাংলার পাশাপাশি উর্দু ও হিন্দি ভাষায় বয়ান করা হবে এবং বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে বয়ানের সঙ্গে সঙ্গে তরজমা করা হবে।
ইজতেমার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুসল্লিরা। তারা বলছেন, কনকনে শীত উপেক্ষা করে দলে দলে ময়দানে এসেছেন তারা। এখানে আমল, আখলাক, তাওহিদসহ ইসলামের মূল ভিত্তি নিয়ে আলোচনা করবেন শীর্ষ মুরুব্বিরা।
বিশ্ব ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে ৫ জোড়া বিশেষ ট্রেন সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ইজতেমার প্রথম পর্ব ১৩ জানুয়ারি থেকে আখেরি মোনাজাত ও দ্বিতীয় পর্ব ২০ জানুয়ারি থেকে আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত বিভিন্ন গন্তব্যে এ সেবা চালু হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট (পূর্ব) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ইজতেমার দুই পর্বে ঢাকা থেকে পাঁচ জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলবে। এ ছাড়া জামালপুর থেকে স্পেশাল ট্রেন চলবে এবং ময়মনসিংহে আখেরি মোনাজাতের দিন দুটি স্পেশাল ট্রেন যাবে।
ইজতেমা উপলক্ষে গাজীপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। গাজীপুরের সিভিল সার্জন মো. খায়রুজ্জামান বলেন, বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পাঁচটি ক্যাম্প স্থাপনের কাজ চলমান। সার্বক্ষণিক ১৪টি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হবে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন জানান, অগ্নিনির্বাপণের জন্য প্রতি খিত্তায় দুটি করে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রাখা হবে। ফায়ার সার্ভিসের চারটি অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি ও পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স দায়িত্ব পালন করবে।
গাজীপুর সিটির ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান বলেন, ইজতেমা উপলক্ষে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার অস্থায়ী টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১২টি নলকূপে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হবে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, দুই পর্বের ইজতেমা সফল করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।