মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারুণ্যের কবি, দ্রোহের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্যের ভাষায় তাই বলতে চাই: সাবাস বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়, জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মাথা নোয়াইনি। আমরা কখনও মাথা নোয়াবো না। বাঙালি জাতি কখনও মাথা নোয়ায় না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মাথা নোয়াননি, তিনি আমাদের মাথা নোয়ানোর শিক্ষা দেয়নি, ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি জীবনের জয়গান গেয়েছেন। তারই নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে আজ।
আজ ২৫ জুন (শনিবার) পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে আয়োজিত সুধী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে গোটা বাঙ্গালী জাতি গর্বিত। কোটি দেশবাসীর সাথে আমিও আজ আনন্দিত, গর্বিত এবং উদ্বেলিত। অনেক বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আর ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে প্রমত্তা পদ্মার বুকে আজ বহু-কাঙ্ক্ষিত সেতু দাঁড়িয়ে গেছে। এই সেতু শুধু ইট-সিমেন্ট-স্টিল-লোহার কংক্রিটের একটি অবকাঠামো নয় এ সেতু আমাদের অহংকর, আমাদের গর্ব, আমাদের সক্ষমতা আর মর্যাদার প্রতীক। এ সেতু বাংলাদেশের জনগণের।’
শত প্রতিকূলতার মাঝেও যারা এই সেতু নির্মাণে জড়িত ছিলেন সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। সেইসাথে যারা পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে নিজেদের জায়গা ছেড়ে দিয়েছেন তাদের প্রতিও তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, এই সেতুর সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের আবেগ, আমাদের সৃজনশীলতা, আমাদের সাহসিকতা, সহনশীলতা এবং আমাদের প্রত্যয়। আমরা এই সেতু করবোই, সেই জেদ। ষড়যন্ত্রের ফলে আমাদের সেতু নির্মাণ দুই বছর বিলম্বিত হয়েছে, কিন্তু আমরা হতোদ্দম হইনি। শেষ পর্যন্ত অন্ধকার ভেদ করে আমর আলোর মুখ দেখেছি। পদ্মার বুকে জ্বলে উঠেছে লাল, নীল, সবুজ, সোনালি আলোর ঝলকানি। ৪২টি স্তম্ভ যেন স্পর্ধিত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলেছিলেন, বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না, পারেনি। আমরা বিজয়ী হয়েছি।
এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা আপনাকে অভিভাদন, আপনাকে স্যালুট করি, গোটা জাতি আপনাকে স্যালুট করে। আপনি বলেছেন, আমরা পারি, প্রমাণ করেছেন পদ্মা সেতু করে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রমাণ করেছেন, আমরা বীরের জাতি।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম। অংশ নিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, দেশের রাজনৈতিক নেতারা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি।