আগামী ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাস্তানদের তালিকা করে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে অবৈধ অস্ত্র জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল রবিবার জারি করা এক পরিপত্রে রিটার্নিং অফিসারদের এই নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকরা দায়িত্ব পালন করছেন।
মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ও প্রতীক বরাদ্দের আগেই যেসব ব্যানার-ফেস্টুন, পোস্টার লাগানো হয়েছে, সেগুলো অপসারণের জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, ৩০০ আসনের রিটার্নিং অফিসারকে গতকাল ওই পরিপত্র পাঠানো হয়েছে। ইসি সচিবালয়ের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষর করা পরিপত্রে সুনির্দিষ্ট পাঁচটি বিষয় নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
১. সব শ্রেণির ভোটার যাতে তাঁদের ভোটাধিকার অবাধ ও নির্ভয়ে প্রয়োগ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও স্থানীয় আস্থাভাজন কর্মীদের সঙ্গে দ্রুত একটি, প্রয়োজনবোধে একাধিক বৈঠক করতে হবে।
আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আইন ও বিধিগত দিক উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করতে হবে। কারো কোনো অভিযোগ থাকলে তা অবিলম্বে তদন্ত করে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
২. নির্বাচনী এলাকার সব স্তরের ভোটারদের, বিশেষ করে নারী ভোটারদের নির্ভয়ে ও নির্বিঘ্নে ভোটদানের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এর জন্য নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গ্রহণ করা কার্যকলাপ সম্পর্কে যেন সব শ্রেণির ভোটার আগে থেকে নিশ্চিত হতে পারেন, তা উপযুক্ত প্রচারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করতে হবে।
৩. ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাসহ সব বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা জোরদার করতে হবে। তালিকা করে চাঁদাবাজ, মাস্তান ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. পর্যাপ্তসংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ভোটকেন্দ্রে মোতায়েনসহ চিহ্নিত গোলযোগপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলোতে বেশি করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. নির্বাচনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দল, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাঁদের সমর্থকরা যাতে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলেন এবং কোনো তিক্ত, উসকানিমূলক ও ধর্মানুভূতিতে আঘাত করে এমন কার্যকলাপ বা বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকেন কিংবা অর্থ, পেশিশক্তি অথবা স্থানীয় ক্ষমতা দ্বারা কেউ নির্বাচনকে প্রভাবিত না করতে পারেন এবং পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সুসম্পর্ক যেন বজায় রাখা হয়, তার নিশ্চয়তা বিধানের জন্য সংশ্লিষ্ট সব মহলের সহযোগিতা কামনা করতে হবে এবং প্রয়োজনবোধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
রিটার্নিং অফিসারদের সতর্ক থাকার নির্দেশ
পরিপত্রে নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে রিটার্নিং অফিসারদের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।