দিনাজপুরের বিরামপুর বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে। এতে করে কমতে শুরু করেছে সবজির দাম। গত এক সপ্তাহে ব্যবধানে ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ কয়েকটি সবজির দাম ৩০-৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) সকালে সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়। শীতকালীন শাকসবজি ওঠায় দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। উপজেলায় অবস্থিত কাঁচা বাজারসহ বিভিন্ন গ্রামীণ হাট বাজারসমূহে পর্যাপ্ত শাকসবজি আমদানি হচ্ছে। কৃষকরা তাদের জমি থেকে সরাসরি বাজারে নিয়ে আসছে।
আবার অবরোধের কারণে পাইকারেরা সবজি পাঠাতে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছেন। এতে উৎপাদন বেশি হওয়ায় সবজির দাম কমে গেছে। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকেরা । বিরামপুর নতুন বাজার,কাটলা,কেটরা,মুকুন্দপুর, হাবিবপুর বাজারের কয়েকজন সবজি ব্যবসায়ী ও কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
নতুন বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী দিলবার বলেন,শীতের নতুন সবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে। এতে দাম কমে আসছে। আবহাওয়াজনিত বড় কোনো সমস্যা না হলে সবজির দাম আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি।
উপজেলার বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহ আগে মানভেদে বেগুনের কেজি ছিল ৮০ টাকা। এখন বেগুনের কেজি ২০-৩০ টাকা। এ ছাড়া শিমের দাম ৮০ থেকে কমে এখন ৪০ টাকা, ৬০ থেকে ৭০ টাকার প্রতি পিস ফুলকপি ২৫-৩০ টাকা, ৫০-৬০ টাকার করলা, ধুন্দল, ঝিঙে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজি মুলা ৩০ টাকা ও পেঁপে ২৫-৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মরিচের কেজি ১০০টাকা থেকে কমে হয়েছে ৭০-৯০ টাকা।
বাজার করতে আসা জাকিয়া আক্তার আখিঁ নামের এক ক্রেতা বলেন, বাজার করতে এসে স্বস্তি পাচ্ছি। কিছুদিন আগেও সবজির দাম আকাশ ছোঁয়া ছিল। আজ প্রতিটি সবজির দাম কম পেলাম। ৮০ টাকার বেগুন ২০ টাকায় কিনলাম। দাম কমে যাওয়ায় আমাদের মতো সাধারণ মানুষের উপকার হলো।
তবে বাজারে টমেটো, গাজর ও বরবটির মতো বেশ কিছু সবজির দাম এখনও বেশি। এসব সবজির কেজি ১০০ টাকার আশপাশে। দেশে ৪-৫ দিন আগে আমদানি করা আলু প্রবেশ করেছে। এতে দেশি আলু দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমেছে। তাতে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে।
সবজির দামে স্বস্তি এলেও পেঁয়াজের বাজার এখনও অস্থিরতা বিরাজমান। নতুন পেঁয়াজ বাজারে না আসার আগপর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনাও কম বলে জানান ব্যবসায়ীরা। খুচরায় দেশি পাতা পেঁয়াজের কেজি এখন ৫০-৬০ টাকা। আর মানভেদে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম এখন ৯০-১০০ টাকা।
কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা আলম বলেন, আগে যখন দাম বেড়েছিল, তখন সবজি মানুষ কিনেছেন কম। এখন সাধারণ ক্রেতারা ভিড় করছে দোকানে।
আগাম ফসল তোলায় এখনও কিছু কিছু সবজির ক্ষেত্রে কৃষকেরা ভালো দাম পাচ্ছে না। বাজারে শিম বিক্রি করতে আসা কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে কিছু শিম ৬০-৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি। গত বছর দেড় বিঘা জমিতে ৬০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করি। এবার লাখের মতো বিক্রি হবে বলে আশা করছি।
বিরামপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার জাহিদুল ইসলাম ইলিয়াস বলেন, এবার উপজেলায় সবজির চাষাবাদ ভালো হয়েছে। কোনো রকম রোগ বলাই নেই। বাজারে সব এলাকা থেকে সবজি আসার জন্য সবজির দাম কমে গেছে।