মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে থানা থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার প্রসঙ্গে কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, কোনো অবস্থায় কোনো সন্ত্রাসীকে ছাড় দেওয়া হবে না। সে যে দলের হোক, যত বড় নেতা হোক।
আজ রোববার বেলা তিনটার দিকে সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের কুসুমপুর জাগরণী সংসদ খেলার মাঠে কৃষিজ যন্ত্রপাতি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আছেন, আপনারা আপনাদের রাজনীতি করেন আমাদের কোনো আপত্তি নাই। কিন্তু আপনারা যদি কোনো আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করেন, কোনো অবস্থায় আপনাদের ছাড় দেওয়া হবে না। রাজনীতি করেন, দেশের জন্য কাজ করেন।’
পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এই উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা কাউকে ছাড় দেবেন না, সেটা আমার ভাই হলেও না। আপনারা অপরাধীদের চার্জশিটে ঢোকান। তারা এমপি হোক বা না হোক, সেটা যে সময় হবে সে সময় দেখা যাবে। এখন আইনশৃঙ্খলায় তাদের কোনো হাত নাই। আমি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বলব, আপনারা তাদের (বিএনপি) তেল মারা বন্ধ করেন। আপনারা কঠোর হন। ভবিষ্যতে কে আসবে, সেটা পরে দেখা যাবে। কোনো মৌসুমি নেতারা দেশের জন্য কিছু করে নাই। কৃষকের পাশে দাঁড়ান, কৃষকরাই দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।’
কৃষিকাজ নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, মুন্সিগঞ্জে আলু উৎপাদন বেশি হয়। গত দুই বছর আলুর দামও বেশি হয়েছে। আলুর দাম বাড়ায় এখন সবাই বলছে, আলুর দাম বেশি, আলুর দাম বেশি। কিন্তু গত পাঁচ-ছয় বছর কৃষকেরা আলুতে অনেক লোকসান গুনেছেন। সে সময় এসব বিষয় নিয়ে কেউ কোনো মন্তব্য করেননি।
স্থানীয় কৃষক জনতার উদ্দেশে এই উপদেষ্টা বলেন, এখন দেশে কৃষিশ্রমিক পাওয়া যায় না। একজন ছেলে যদি প্রবাসে থাকেন, সে দেশে এসে আর মাঠে কাজ করতে চায় না। এটা একটা খারাপ দিক। চা খেয়ে শরীরের ক্ষতি না করে, মাঠে কাজ করে দেশের উৎপাদন বাড়ান।
কৃষি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতিটি ইউনিয়নে তিনজন করে কৃষি কর্মকর্তা আছেন। তাঁরা যেন কৃষকের পাশে থাকেন। ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে বসে না থাকেন। তাহলে কৃষিতে উন্নতি হবে। আমাদের কৃষকেরা আমাদের খাইয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বাংলাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে দুর্নীতি। আমি, আমার সরকারি কর্মকর্তারা যদি কেউ দুর্নীতি করে, সেটি আপনারা ফলাও করে প্রচার করবেন। দুর্নীতিটা কমে গেলে দেশের উন্নতি হবে। রাজনৈতিক ব্যক্তিরা যাঁরা ভবিষ্যতে আসবেন, তাঁরাও সজাগ হবেন। কিন্তু কোনো মিথ্যা সংবাদ প্রচার করবেন না।’
এর আগে সিরাজদিখানের কৃষকদের মধ্যে ৩০টি পাওয়ার টিলার ও ৪০টি শ্যালো মেশিন বিতরণ করা হয়। উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এবং ঢাকা ব্যাংক পিএলসির অর্থায়নে কৃষিজ যন্ত্রপাতি হস্তান্তর অনুষ্ঠানটি হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শামসুল আলম সরকার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি) মো. মাহমুদুর রহমান প্রমুখ।