কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনায় অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী পেপার মিল যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ ছিল। অবশেষে কর্ণফুলী পেপার মিলের নিজস্ব প্রকৌশলী দ্বারা ক্রুটি সারানোর পর কারখানাটি উৎপাদনের ধারায় ফিরে এসেছে। শুক্রবার (৬ জানুয়ারী) থেকে কাগজ উৎপাদন শুরু হয়েছে বলে কর্ণফুলী পেপার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী স্বপন কুমার সরকার নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কারখানার অটোমেটিক ভোল্টেজ রেগুলেটরে (এভিআর) ক্রুটি থাকার কারণে কেপিএম দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ ছিল। কারখানার দক্ষ প্রকৌশলীরা টানা পরিশ্রম করে এভিআরের ক্রুটি সারাতে সক্ষম হন। এতে করে শুক্রবার থেকে কেপিএম উৎপাদনের ধারায় ফিরতে পারায় কারখানার সর্বস্তরের শ্রমিক কর্মচারি ও কর্মকর্তরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।
কেপিএমের প্রকৌশলী মোঃ আবুল হোসেন জানান, কেপিএমে উৎপাদন বন্ধ হবার মূল কারণ ছিল অটোমেটিক ভোল্টেজ রেগুওেলটরে (এভিএম) ক্রুটি। স্বাভাবিক নিয়মে এভিএমে ৬ হাজার ৬শ ভোল্ট থাকার কথা কিন্তু সেখানে এভিএমে ৯ হাজার ভোল্ট হচ্ছিল।
সমস্যা চিহ্নিত হবার পর থেকে ক্রুটি সারানোর জন্য কারখানার নিজস্ব প্রকৌশলীরা প্রাণান্ত চেষ্টা করে আসছিলেন। তিনি নিজে (প্রকৌশলী আবুল হোসেন), প্রকৌশলী ইমাম খফর উদ্দিন রাজি, প্রকৌশলী যোবায়ের রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা দীর্ঘ সময় প্রচেষ্টা চালিয়ে এভিএমের ভোল্টেজ স্বাভাবিক করতে সক্ষম হন। আর এই কাজে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী স্বপন কুমার সরকার সার্বক্ষনিক দেখভাল এবং দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ দেন। যার ফলে সমস্যা সামাধান করে কেপিএম পুনরায় উৎপাদনে যেতে সক্ষম হয়।
এ ব্যাপারে প্রতিক্রীয়া জানিয়ে শ্রমিক নেতা আবদুল রাজ্জাক এবং আনোয়ার হোসেন বাচ্চু বলেন, দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর কেপিএম পুনরায় উৎপাদনে ফিরে আসায় শ্রমিক কর্মচারি এবং কর্মকর্তাদের মাঝে প্রাণ ফিরে এসেছে। শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী স্বপন কুমার সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং প্রকৌশলী মোঃ আবুল হোসেন মিয়া, প্রকৌশলী ইমাম ফখর উদ্বির রাজি, প্রকৌশলী যোবায়ের রহমানসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রচেষ্টার ফলে কেপিএম পুনরায় উৎপাদনে ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছে। তবে কেপিএমের বন্ধ বিভাগ বিশেষ করে চিপার এবং পাল্প মিল চালু করার জন্য শ্রমিক নেতারা দাবী জানান। বর্তমানে কেপিএম আমদানি করা পাল্প দিয়ে কাগজ উৎপাদন করছে। এতে উৎপাদন খচর বেশী হচ্ছে। অথচ এক সময় কেপিএমের নিজস্ব পাল্প উৎপাদনের সক্ষমতা ছিল। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কেপিএমের চিপার এবং পাল্প মিল বন্ধ রয়েছে। চিপার ও পাল্প মিল চালু করার বিষয়ে তাঁরা কেপিএমের প্রাক্তন এমডি এবং বর্তমানে বিসিআইসির প্রধান প্রকৌশলী সুদীপ মজুমদারের সাথে আলোচনা করেছেন বলে জানান।
বিসিআইসির প্রধান প্রকৌশলী সুদীপ মজুমদার শ্রমিক নেতাদের দাবির প্রতি গুরুত্বারোপ করেন এবং এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনার জন্য তাঁদের বিসিআইসি’র সদর দপ্তর ঢাকায় যোগাযোগের পরামর্শ দেন বলে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ জানান। কারখানার গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থে বিষয়টি নিয়ে আগামী সপ্তাহে বিসিআইসি’র সদর দপ্তরে যাবেন বলে শ্রমিক নেতা আবদুল রাজ্জাক ও আনোয়ার হোসেন বাচ্চু জানান।