রোজা এলেই জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় নামেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ি। বর্তমান সময়ে সারাদেশের ন্যায় পার্বত্য রাঙামাটিতেও এক শ্রেণীর মুনাফালোভী ব্যবসায়ি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর উচ্চ মূল্যে দাম নিচ্ছেন ক্রেতাদের কাছ থেকে। এমনিতর সময়ে রাঙামাটি শহরে ন্যায্যমূল্যে মাত্র এক থেকে তিন টাকা মুনাফায় নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্যাদি বিক্রি করে নজির সৃষ্টি করছেন এক নবীন ব্যবসায়ি।
শহরের বাস টার্মিণালের শান্তি নগরে মায়ের দোয়া ইত্যাদি স্টোর নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মোহাম্মদ জাবেদ নামের এই তরুন ব্যবসায়ি। সম্পূর্ন পারিবারিকভাবে পরিচালিত এই দোকানে নিত্য প্রয়োজনীয় পেয়াজ, রশুন, চাউল দ্রব্যাদি থেকে শুরু করে কাঁচা তরকারি, ডিম পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাঙামাটি শহরের বাজারগুলোতে যে দরে জিনিসপত্র বিক্রি করা হয়, শান্তিনগরের মায়ের দোয়া ইত্যাদি ষ্টোরে প্রতিটি আইটেমে ৩ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কম মূল্যে জিনিসপত্র কিনতে পাওয়া যায়।
পুরাতন পারা এলাকার বাসিন্দা মোজাম্মেল জানিয়েছেন, আমি ব্যবসায়িক কাজে প্রতিদিনই শান্তিনগরে যেতে হয়। সেখানেই মায়ের দোয়া দোকানটি থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রগুলো কিনে নিই। তিনি বলেন, আমি পোলাওর চাল কিনেছি যেগুলো বাজারে ১৫০ টাকা সেই চাউল কিনেছি ১৩৫ টাকা কেজি দরে।
রিজার্ভ বাজারের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু বক্কর সুমন জানান, আমি সয়াবিন তেল কিনেছি ১৪২ টাকায়। বাজারের দোকানগুলোতে সেই একই তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।
ফরেষ্ট কলোনী এলাকার বাসিন্দা কামরুল ইসলাম ফয়সাল বলেন, আমি জাবেদ ভাইয়ের মায়ের দোয়া থেকে পেয়াজ কিনেছি ৩০ টাকা কেজিতে। রমজানের এই সময়টাতে অন্যান্য মুদি দোকানগুলোতে বিক্রি করছে ৪০ টাকা কেজিতে। বাজারে ডিম ১৩ টাকায় খুচরা বিক্রি করলেও মায়েরদোয়াতে বিক্রি করছে সাড়ে ১১ টাকায়।
শহরের রসুলপুর এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ি শামসুল আলম জানিয়েছেন, এই দোকানটিতে পাউডার দুধ থেকে শুরু করে চাউল, সয়াবিন তেল, পেয়াজ রসুন, নুডলস, মসলা সবকিছুই রিজাভ বাজার, বনরূপা বাজারের দোকানগুলো থেকে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কম দামে কিনতে পারা যায়। আমি প্রায় সময় তার কাছ থেকে বাসার নিত্য প্রয়োজনীয় সদাইগুলো ক্রয় করি।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে মায়ের দোয়া ইত্যাদি ষ্টোরের পরিচালক মোহাম্মদ জাবেদ জানান, চাল-ডাল, সয়াবিন তেল, পেয়াজ-রসুন, আলু-ডিম থেকে শুরু করে অধিকাংশ জিনিসপত্র আমি চট্টগ্রামের পাইকারি হাট থেকে সংগ্রহ করি। মানুষের ক্রয় ক্ষমতার কথা চিন্তা করে স্বল্প মুনাফায় আমি জিনিসপত্র বিক্রি করার চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমি নিন্মবিত্ত ক্রেতাদের চাহিদার কথা চিন্তা করে যে যত টাকার জিনিসপত্র চায় ঠিক ততটাকার দেওয়া চেষ্ঠা করি। তিনি বলেন, মানুষের দোয়া আর ভালোবাসা পেলে আমি আমার ব্যবসার এই নিয়ম ভবিষ্যতেও ধরে রাখার চেষ্ঠা করবো।