রাঙামাটি শহরে প্রয়োজনীয় সেফটি সরঞ্জাম না নিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে উঠে মেরামত কাজ করার সময় নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয়ে আইয়ুব হেলাল নামের এক কর্মচারির মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকাল আটটার দিকে রাঙামাটি শহরের চম্পকনগর এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত আইয়ুব হেলাল বিদ্যুৎ বিভাগের মেরামত সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছের রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জালাল উদ্দিন।
নিহতের বড় ভাই ইউছুপ বেলাল জানান, ভোর থেকে চম্পকনগর এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। সকাল ৮টার দিকে বিদ্যুৎ বিতরণ থেকে একটি টিম ট্রান্সফর্মারে কাজ করে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন স্বাভাবিক করতে আসে। তখন লাইনটি ঠিক করতে হেলাল উদ্দিন বৈদ্যুতিক খুঁটিতে উঠেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখান থেকে তিনি পড়ে যান এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়।
বৈদ্যুতিক শর্টের কারণে খুঁটি থেকে পড়ে গিয়ে হেলালের মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে নিহতের ভাই বেলাল বলেন, তার ভাইয়ের মৃত্যুতে সংশ্লিষ্টদের অবহেলা ছিলো। ছোট ভাইয়ের এই মৃত্যুতে তার দুইটি ছোট ছোট কন্যা সন্তান নিয়ে পরিবারটির আর কোনো অবলম্বন রইলো না। নিহতের পরিবারের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. শওকত আকবর জানান, সকালে জরুরী বিভাগে একজনকে আনা হয়। যার মধ্যে কোনো প্রাণের স্পন্দন না থাকায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সে সময় আমরা জানতে পারি মৃত ব্যক্তি বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারি। পরবর্তীতে মৃত ব্যক্তিকে ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ নিয়ে যায়।
এদিকে চম্পকনগরে কাজ করার সময় বৈদ্যুতিক সংযোগ লাইনে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ ছিলো জানিয়ে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ট্রান্সফরমারের উপর দাঁড়িয়ে কাজ করার সময় হয়তো সে ব্যালেন্স রাখতে না পেরে নিচে পড়ে গেছে। তিনি দাবি করেন, মেরামত কাজের সময় বিদ্যুৎ সংযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ ছিলো। এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারিরা জানিয়েছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে কর্মরত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লোকজন ঝুঁকিভাতা পেলেও পাহাড়ি অঞ্চলে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যুতায়নে কাজ করলেও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা ঝুঁকি ভাতা পায়না।
উল্লেখ্য এর আগেও গত কয়েক বছরে একই ধরনের বেশ কয়েকটি দূর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে রাঙামাটির বিদ্যুৎ বিভাগে।