রাঙামাটিতে মসজিদ কমিটির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের ভিত্তিহীন অভিযোগকারির বিরুদ্ধে প্রকৃত সত্য তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বায়তুস ছালাম কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় মুসল্লীগণ।
বুধবার দুপুরে রাঙামাটি প্রেসক্লাবের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান, কোনো প্রকার যাচাই-বাচাই না করে কমিটির নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে সম্পূর্ন মিথ্যা অভিযোগ তুলে চার লাখ টাকা আত্মসাতের ভিত্তিহীন অভিযোগে জনৈক আলাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি।
মনগড়া মানহানিকর তথ্য পরিবেশন করে মসজিদ কমিটি ও উপদেষ্টার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে আলাউদ্দিন স্থানীয় মুসল্লীদের ধর্মীয় আবেগ অনুভূতিতে আঘাত করার পাশাপাশি ফৌজদারি অপরাধও করেছে। তাই বিষয়টি নিয়ে জনমনে যাতে বিভ্রান্তির সৃষ্টি না হয় সে লক্ষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরেছেন বায়তুস ছালাম কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় মুসল্লীরা।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের উপস্থিত ছিলেন বায়তুস ছালাম জামে মসজিদ এর পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ শাহ আলম, সহ-সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক, সাবেক সভাপতি তাজুল ইসলাম, মোঃ ফরিদসহ ভেদভেদী এলাকার সাধারণ মুসল্লীগণ উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ বলেন, স্থানীয় মূসল্লীদের দানকৃত নিজস্ব অর্থায়নে আমাদের মসজিদটি পরিচালিত হয়ে আসছে। মসজিদের নিজস্ব আয়ের জন্য ইতোপূর্বে কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো ধরনের অনুদান/বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। মসজিদের আয়বর্ধনে আজকের এই অবস্থানের অন্যতম সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে ভেদভেদী এলাকার ঐতিহ্যবাহী সামাজিক সংগঠন তারুণ্য ক্লাব।
এই তারুন্য ক্লাবের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ১৬ লাখ টাকার একটি প্রকল্প প্রদান করা হয়। কিন্তু ক্লাবের জায়গা নিয়ে সমস্যা থাকায় সকলের সম্মতিক্রমে মসজিদের জন্য উক্ত প্রকল্পের অর্থগুলো প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। প্রকল্পের অর্থ দিয়ে মসজিদের জন্য দোকানঘর ও সন্মানিত ইমাম সাহেবের বসতঘরের ৭০ শতাংশ নির্মাণ করা হয়। তারুন্য ক্লাবের সৌজন্যে প্রাপ্ত অর্থের বিনিময়ে আমাদের মসজিদের উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন হওয়ার কারনে মসজিদ কমিটির সার্বিক সিদ্ধান্ত অনুসারে তারুন্য ক্লাবকে ৩ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার অনুদান প্রদান করা হয়।
যাহা মসজিদ কমিটির রেজুলেশনে লিপিবদ্ধ রয়েছে। এই তথ্যকে গোপন করে আমাদের বিরুদ্ধে চার লাখ টাকা আত্মসাতের ভিত্তিহীন অভিযোগ করে গত ৩০/০৫/২০২৩ ইং তারিখে সংবাদ সম্মেলন করেছে আলাউদ্দিন। এছাড়াও উক্ত সংবাদ সম্মেলনে বারংবার একই শব্দ চয়ন করে মসজিদ কমিটির সন্মানিত নারী উপদেষ্টার বিরুদ্ধেও বিষোদগার করা হয়েছে। যেটি সম্পূর্ন অযোক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য এবং মানহানিকর।
মসজিদ প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মূসল্লীদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র স্থান এবং একটি ধর্মীয় আবেগ অনুভূতির স্থান। জাতির দর্পণ হিসেবে পরিচিত সংবাদ মাধ্যমকে ব্যবহার করে এই মসজিদের টাকা আত্মসাৎ করার মিথ্যা ও বানোয়াট উদ্ভূট তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে মসজিদ কমিটির প্রত্যেক সদস্যকে প্রতারক হিসেবে উপস্থাপন করে সামাজিকভাবে হেয় করার পাশাপাশি ব্যক্তি জীবনকে বিষিয়ে তুলেছে।
এই ধরনের হীন কর্মকান্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থেকে শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও ফৌজদারি অপরাধ করেছেন জনৈক আলাউদ্দিন গংরা। আলাউদ্দিনের এহেন অপকর্মের বিরুদ্ধে ফূসে উঠেছে স্থানীয় মূসল্লীগণ। ইতোমধ্যেই সন্মানিত মূসল্লীদের পক্ষ থেকেও আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ মসজিদ কমিটির কাছে এসেছে। যার প্রেক্ষিতে আমরা মসজিদ কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে আলাউদ্দিনকে কমিটি থেকে অব্যাহতি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে উপরোক্ত বিষয়ে আলাউদ্দিনের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে জানান, মসজিদের লেনদেনের বিষয়টি আমাকে আগে বলেনি। মসজিদের ফান্ডে এখন কোনো টাকা-ই নেই। সেক্ষেত্রে মসজিদ কেন অনুদান দেবে। আর আমি যেহেতু মসজিদ কমিটির একজন সদস্য সেক্ষেত্রে আমি জবাব চাইতেই পারি। আমি বারংবার হিসেব চেয়েছি তারা আমাকে হিসেব দেয়নি। তারা আমাকে সমাধান দিতে পারেনি বিধায় আমি সংবাদ সম্মেলন করেছি।