রাতের আধারে কলেজ শিক্ষার্থীর বাড়িতে দেখা করতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে নিজেকে গণধোলাইয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে ছাত্রলীগ নেতা মাহাবুব। তিনি খেদারমারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ধনবিন্দু চাকমা।
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলাধীন বড় দূরছড়ি এলাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যারাতে সংগঠিত এই ঘটনায় স্থানীয়দের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় নিজ মোটর সাইকেলসহ সঙ্গে থাকা বন্ধুকে রেখে যায়। স্থানীয় পাহাড়ি বাসিন্দারা মোটর সাইকেলসহ মাহাবুবের বন্ধু হান্নান ওরফে সোহাগকে আটকে রাখে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও একাধিক জনপ্রতিনিধি জানিয়েছেন, খাগড়াছড়ি কলেজে পড়ুয়া চাকমা সম্প্রদায়ের জনৈক কলেজছাত্রীর (২৪) সাথে এরআগেও বেশ কয়েকবার রাতের অন্ধকারে দেখা করতে খেদারমারা এলাকায় যেত ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মাহাবুব।
পৃথক সম্প্রদায়ের দু’জনের এই অসম সম্পর্ক স্থানীয়রা মেনে নিতে পারেনি। তাই মাহবুবকে নজরদারিতে রেখেছিলো স্থানীয় এলাকাবাসী। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যারাতে মাহাবুব তার বন্ধু সোহাগকে সাথে নিয়ে উক্ত কলেজ ছাত্রীর বাড়িতে গেলে স্থানীয়রা তাদের ঘিরে ফেলে।
এসময় কয়েকজনের সাথে বাকবিতন্ডাও হয়। এসময় স্থানীয়রা তাকে গণধোলাই দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ার প্রস্তুতি নিতে দেখে পরিস্থিতি বেগতিক বুঝতে পেরে ছাত্রলীগ নেতা মাহাবুব তার সঙ্গীয় বন্ধুকে মোটর সাইকেলসহ রেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এসময় বিক্ষুব্ধ যুবকরা মোটর সাইকেলটি ভাংচুর করে বলে জানা গেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় মেম্বার ধন বিন্দু চাকমা বলেন, মেয়েটিকে ধর্ষন করেছে এই ধরনের কোনো প্রমান মেলেনি। মনে হচ্ছে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। কিন্তু উভয়েই পৃথকভাবে পাহাড়ি-বাঙ্গালী সম্প্রদায়ের হওয়ায় এই বিষয়ে যাতে কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িকতার দিকে না গড়ায় সে বিষয়ে এলাকার মুরব্বিগণ এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করে আটককৃতদের জিম্মায় নিয়ে গেছে। বিষয়টি সমাধানে আগামীকাল বৈঠকে বসবেন বলে তারা জানিয়েছেন।
এদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মাহাবুবকে তার বক্তব্য জানতে বিভিন্ন মাধ্যমে একাধিকবার চেষ্ঠা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ছাত্রলীগ নেতার এহেন নৈতিক স্থলনের বিষয়টি মুহুর্তের মধ্যেই ইউনিয়ন থেকে উপজেলা হয়ে রাঙামাটি শহরেও চাওর হয়ে গেলে সমালোচনার ঝড় উঠে।