রাঙামাটির সাজেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে গত ১৫দিনে এলাকাটিতে দু’দফায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও এটা মহামারি নয় বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম লংথিয়ান পাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গুরুত্বর অসুস্থ হওয়া মেয়ের জামাইকে দেখতে গিয়ে সেখানে রান্না করা খাবার খেয়ে বাহন ত্রিপুরা(৫৫) ও মেলাতি ত্রিপুরা(৫০) নামের স্বামী-স্ত্রী উভয়েই মারা গেছেন। ১৭ জুন শনিবার রাত তিনটার সময় তাদের মৃত্যু হয়। তারা উভয়েই সাজেকের বেটলিংয়ের বাসিন্দা। এর আগে গত ৭ জুন বুধবার ভোর রাতে গবতি বালা ত্রিপুরা(৫০) ও দরুং ত্রিপুরা (৬০) দু’জনের মৃত্যু হয়।
রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা জানিয়েছেন, সাজেকে এনিয়ে দু’দফায় চারজনের মৃত্যু হলেও সেখানে বর্তমানে ডায়রিয়া মহামারি আকার ধারন করেনি। তিনি জানান, মূলতঃ শনিবার রাতে নিহতরা তাদের মেয়ের জামাইকে দেখতে এসেছিলেন। এসময় তারা ধর্মীয় অনুষ্টান করে এবং রাতে খাওয়া-দাওয়া করার পরপরই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলো।
এদিকে স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, প্রচন্ড গরম ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে সাজেক ইউনিয়নের লংথিয়ান পাড়াসহ আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে নারী শিশু বৃদ্ধ সহ আরো প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়।
সাজেক ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার বনবিহারী চাকমা জানান, গত একমাস সাজেকের লংথিয়ান পাড়া, অরুণপাড়া, কাইজা পাড়া, রায়না পাড়া ও শিয়ালদহ বেটলিং এলাকাসহ আশপাশের বেশকিছু এলাকায় নতুন করে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এলাকায় আশপাশে কোন হাসপাতাল বা কমিউনিটি ক্লিনিক না থাকায় স্থানীয় তান্ত্রিক দ্বারা চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকে স্থানীয় ত্রিপুরা অধিবাসীরা। অত্যন্ত দূর্গম সেই এলাকাগুলো যাতায়াতে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় পায়ে হেটে এতো দুর থেকে মাচালং ও উপজেলা সদর হাসপাতালে রোগী পাঠানো সম্ভব নয়।
এদিকে সাজেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশের পর ৮ই জুন বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও উপজেলা প্রশাসনের ৩টি মেডিকেল টিম পাঠিয়ে টানা এক সপ্তাহব্যাপী চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করে গত বুধবার মেডিকেল টিম ফিরে আসে। এর মধ্যেই নতুন করে আরো দুজন গ্রামবাসীর মৃত্যু হলো।