কক্সবাজারের উখিয়ার এক বিহারাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিশুকে মানুষের পায়খানা খাওয়ানোসহ অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শিশুটির বাড়ি বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা সদরের ৪ নং ওয়ার্ডের পানবাজার ভারতমোহন কারবারি পাড়ায়। সে এই এলাকার রয়া তঞ্চঙ্গ্যার ছেলে অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা (৭)। নির্যাতনকারী বিহারাধ্যক্ষের নাম জ্যােতি দত্ত ভিক্ষু বলে জানা যায়।
জানা যায়, অভাবের সংসারের কারনে ও ধর্মীয় শিক্ষার জন্য চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি উখিয়া উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের বড়বিল বৌদ্ধবিহারে শিশুটির মা শিশুটিকে আশ্রমে ভর্তি করান। বিহারটিতে নির্যাতিত অনন্তসহ মোট ৭ জন শিশু থাকেন বলে জানা যায়। বৌদ্ধবিহারটির অধ্যক্ষ জ্যোতি দত্ত ভিক্ষু ও ২ জন শ্রমণ মিলে শুরু থেকে এই বিহারের বাচ্চাদের নির্যাতন করে আসছেন বলে অভিযোগ উঠে। একের পর এক ঘটনার পর বর্তমানে বিহারের অধ্যক্ষ পলাতক রয়েছে।
নির্যাতনের করুণ বর্ণনা দিতে গিয়ে শিশু অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা পাহাড়বার্তা’কে জানায়, বিহারের দত্ত ভান্তে( জ্যোতি দত্ত ভিক্ষু) সব সময় মারধর করেন। ভান্তেসহ অন্য দুইজন শ্রমণ অনিক শ্রমণ ও সেকানন্দ শ্রমণ মিলে শরীরে গরম পানি ঢেলে দিতেন। কারেন্টের তার দিয়ে পিঠে মারধর করতেন। প্রতিনিয়ত মাথায় আঘাত করতেন, খাওয়ার সময় খাবারের প্লেটে পানি ঢেলে দিতেন। লাথি মেরে মেঝেতে ফেলে দিতেন। তারপর ব্লেড দিয়ে কেটে সেখানে লবণ দিতেন। এমনকি একবার পায়খানা পর্যন্ত খাওয়ানো হয় বলে নির্যাতনের বর্ণনা করে অঝোরে কেঁদে উঠেন।
শিশুটির মা আনন দেবী তঞ্চঙ্গ্যা পাহাড় বার্তা’কে জানায়, ভর্তি করানোর পর থেকে বাচ্চার খোঁজখবর নিতেন। একসময় বাচ্চাটাকে নির্যাতন করা শুরু করেন জ্যোতি দত্ত ভিক্ষু ও ২ জন শ্রমণ। ঐ বৌদ্ধ ভিক্ষু কারেন্টের তার দিয়ে শরীরে আঘাত করতেন। শুরুর দিকে ছেলের কোন কথার গুরুত্ব দেয়নি আমরা। পরে যখন বৌদ্ধবিহারে থাকা একজন বাচ্চা আমাদেরকে এই নির্যাতনের খবর জানায় তখনই আমরা গত ১৯ মে অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা নিয়ে আসি। ছেলেটিকে আনতে যাওয়ার খবর পেয়ে তার আগে থেকে বিহারঅধ্যক্ষ বিহার ছেড়ে অন্যত্রে চলে যান বলে জানান তিনি।
এই বিষয়ে বড়বিল বৌদ্ধ বিহারের বিহার অধ্যক্ষ জ্যােতি দত্ত ভিক্ষুকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এই বিষয়ে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শামীম হোসেন পাহাড় বার্তা’কে বলেন, এই ধরনের অভিযোগ এখনো আসেনি। যদি আসে তাহলে প্রয়োজনীয় আইন আনুক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে শিশুর সারা শরীরের অসংখ্য কাটা দাগ ও নির্যাতনের চিহ্ন দেখে স্থানীয়রা বিহার অধ্যক্ষ জ্যােতি দত্ত ভিক্ষুকে গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।