চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বাংলাদেশ দল নিয়ে কি আক্ষেপই বাড়াচ্ছেন তানজিদ হাসান–লিটন দাস?
সংস্করণ ভিন্ন, বিপিএলে টি–টোয়েন্টি, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ওয়ানডে। তবু ফর্ম বিবেচনায় নিলে আক্ষেপ তো হতেই পারে। আগামী মাসে শুরু হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বাংলাদেশ দলে তানজিদ আছেন। কিন্তু জাতীয় দলে রান–খরার মধ্যে থাকায় লিটন দাস নেই। দুজনই থাকলে বাংলাদেশ দল যে ওপেনিং নিয়ে বাড়তি ভরসা পেত, সেটিই বিপিএলে দেখিয়ে যাচ্ছেন তানজিদ–লিটন।
ঢাকা ক্যাপিটালসের দুই ওপেনার আজ চিটাগং কিংসের বিপক্ষে গড়েছেন ৭৫ রানের জুটি। যে জুটি ১৪৮ রান তাড়ায় ঢাকার জয়কে সহজ করে দিয়েছে। ১১ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেটের জয় পেয়েছে ঢাকা। প্রথম ছয় ম্যাচেই হেরে যাওয়া দলটি সর্বশেষ চার ম্যাচের তিনটিই জিতেছে।
দশম ম্যাচে এসে তৃতীয় জয়—বোঝাই যাচ্ছে, এবারের বিপিএলে ঢাকা ক্যাপিটালস খুব একটা ভালো খেলেনি। তবে এর মধ্যেও বেশির ভাগ ম্যাচেই ঢাকাকে ওপেনিংয়ে ভালো একটি সংগ্রহ এনে দিয়েছে তানজিদ–লিটন জুটি।
যার মধ্যে বিপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৪১ রানের জুটি যেমন আছে, আছে দুটি ফিফটি ছাড়ানো জুটিও। ২৫ ছাড়ানো জুটিও দুটি। উদ্বোধনী জুটিতে তো বটেই, যেকোনো জুটিতেই এবারের বিপিএলে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন তানজিদ–লিটন। বিপিএল ইতিহাসে এক আসরে সেরা জুটির রেকর্ডেরও ওপরের দিকেই এখন তাঁদের নাম।
১২ জানুয়ারি সিলেটে দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে ২৪১ রানের জুটি গড়েন লিটন ও তানজিদ, তুলে নেন সেঞ্চুরিও
আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কিংসের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচের পর তানজিদ–লিটনের জুটিতে মোট রান ৯ ইনিংসে ৪৭৭। এর মধ্যে একটি ম্যাচে দুজনের জুটি হয়েছিল তৃতীয় উইকেটে, বাকি ৮টিতে ওপেনিংয়ে ৪৬৯।
এবারের বিপিএলে যেকোনো উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান অ্যালেক্স হেলস–সাইফ হাসান জুটির ৩৪৩। রংপুর রাইডার্সের দুই ওপেনার অবশ্য জুটিও বেঁধেছেন মাত্র চার ইনিংসে। তবে শুধু ওপেনিং বিবেচনায় নিলে তানজিদ–লিটনের ধারেকাছেও কেউ নেই। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দুর্বার রাজশাহীর জিশান আলম–মোহাম্মদ হারিস জুটির ১৭৩। লিটন–তানজিদ তাঁদের চেয়ে তিন শতাধিক রানে এগিয়ে থাকার পেছনে বড় ভূমিকা সিলেটে দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে ওই ২৪১ রানের জুটির।
তানজিদ–লিটনের জুটি এবারের আসর ছাড়িয়ে এখন বিপিএলেই রেকর্ড গড়ার পথে। আগের ১০ আসর মিলিয়ে ওপেনিংয়ে এর চেয়ে বেশি রান করতে পেরেছে মাত্র দুটি জুটি। লিটন দাস ও আফিফ হোসেনের ৫৬১ আর তামিম ইকবাল ও এনামুল হকের ৪৮৬। লিটন–আফিফ ওপেনিংয়ে জুটি বেঁধেছেন ২০১৯ ও ২০২০ সালে। দলও ছিল ভিন্ন, একবার রাজশাহী রয়্যালসে, আরেকবার সিলেট সিক্সার্সে। এনামুল–তামিম জুটির রানও ওই দুই বছরেই, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ও ঢাকা প্লাটুনের হয়ে।
তানজিদ হাসানের রান চার শ ছাড়িয়ে গেছে
বিপরীতে তানজিদ ও লিটন এবারই প্রথম জুটি গড়েই দুই আসরব্যাপী আগের দুই জুটিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে। তামিম–এনামুল জুটি এগিয়ে আছে ১৭ রানে, ৯২ রানে লিটন–আফিফ।
জুটির এসব রেকর্ডের পথেই ব্যক্তিগত কিছু অর্জন হয়ে গেছে তানজিদ ও লিটনের। এবারের আসরে সর্বোচ্চ স্কোরারের তালিকায় প্রথম দুটি নামও এই দুজনের। আজ ৯০ রানে অপরাজিত থাকা তানজিদের মোট রান ৪১০, আর ২৫ রানে থেমে যাওয়া লিটনের ৩৪৮।