১৭ মে ছিলেন শারজায়। ১৮ মে দিল্লি। শারজায় বাংলাদেশ দলের হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি–টোয়েন্টি খেলেই রওনা হয়েছিলেন ভারতে। ২০ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে দিল্লি ক্যাপিটালসের জার্সি পরে নেমে পড়েন গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে।
এবারের আইপিএলে মোস্তাফিজুর রহমানের শুরুটা ছিল এমনই ব্যস্ততায় ঘেরা। খেলা শেষ করে বিমানে, বিমান থেকে নেমে খেলায়। মোস্তাফিজ যোগ দেওয়ার পর দিল্লি ম্যাচ খেলেছে তিনটি। তিনটিতেই খেলেছেন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি পেসার।
মোস্তাফিজকে দিল্লি নিয়েছিল বদলি খেলোয়াড় হিসেবে। এ মাসের শুরুর দিকে ভারত–পাকিস্তান পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যে আইপিএল স্থগিত হয়ে গেলে বিদেশি ক্রিকেটাররা ভারত ছেড়ে যান। এক সপ্তাহ পর আবার খেলা শুরু হলেও বিদেশিদের কেউ কেউ আর ফেরেননি। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার জ্যাক ফ্রেজার–ম্যাগার্ক ফিরবেন না বলে দেওয়ায় দিল্লি বদলি হিসেবে মোস্তাফিজকে দলে ভেড়ায়।
দিল্লির হয়ে ডেথ ওভারের দায়িত্ব সামলেছেন মোস্তাফিজ।বিসিসিআই
তবে ম্যাগার্কের নাম সামনে আনা হলেও মোস্তাফিজ মূলত মিচেল স্টার্কের জায়গাতেই খেলেছেন। অস্ট্রেলিয়ার এই পেসারও দেশে ফিরে যাওয়ার পর আর ভারতমুখী হননি। মোস্তাফিজের প্রথম ম্যাচ ছিল গুজরাটের বিপক্ষে। সেদিন ৩ ওভার বল করে ২৪ রান দিয়ে উইকেটবিহীন ছিলেন তিনি।
উইকেট সেদিন দিল্লির কোনো বোলারই পাননি। গুজরাট দিল্লির তোলা ১৯৯ রান টপকে গিয়েছিল পুরো ১০ উইকেট আর এক ওভার হাতে রেখেই। শুবমান গিল ও সাই সুদর্শনকে থামানোর জন্য যে ছয়জন বল হাতে নেন, তাঁদের মধ্যে মোস্তাফিজ ছাড়া বাকি সবার ইকোনমি ছিল ৮–এর ওপর।
পরের ম্যাচে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষেও রান খরচের হার তুলনামূলক কমই ছিল। এই ম্যাচে মোস্তাফিজ ৪ ওভারে দেন ৩০ রান, নেন রোহিত শর্মার উইকেটও। তবে ২৯ বছর বয়সী এই পেসার সবচেয়ে ভালো করেছেন কাল পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে। এদিন ৪ ওভারে ৩৩ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট, যা তাঁকে বাংলাদেশিদের মধ্যে সাকিব আল হাসানকে টপকে আইপিএলে সবচেয়ে বেশি উইকেটের (৬৫) মালিক বানিয়ে দিয়েছে। এদিন মোস্তাফিজের তিনটি উইকেটের দুটিই ডেথ ওভারে।
শেষ ম্যাচে তিন উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান।এএফপি
সব মিলিয়ে ৩ ম্যাচে ১১ ওভার বল করে ৭.৯০ ইকোনমি ও ২১.৭৫ গড়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। যা ইকোনমি ও গড়ের দিক থেকে গত আসরের চেয়ে ভালো। গত বছর চেন্নাইয়ে ৯ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়েছিলেন ওভারপ্রতি ৯.২৬ রান খরচ ও ২২.৭১ গড়ে।
মোস্তাফিজ দিল্লির জন্য যে ভালো সংযোজন ছিলেন, সেটি বোঝা যাবে ডেথ ওভারের একটি পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে। এবারের আসরে দিল্লির হয়ে যাঁরা ডেথ ওভারে বোলিং করেছেন, তাঁদের মধ্যে স্টার্ক ও মোস্তাফিজ রান খরচ করেছেন ৯.০৭ হারে। ১১৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ৯ উইকেটও (স্টার্ক ৭টি)। বাকি যাঁরা বল করেছেন, তাঁরা খরচ করেছেন ওভারপ্রতি ১৩.৫৭ রান করে, ৭ উইকেট নেওয়ার পথে দিয়েছেন ৩৮৭ রান।