মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর বলটা টেনে লং অন দিয়ে ছয় মারলেন সুনীল নারাইন। সে শটেই গড়লেন নতুন রেকর্ড। মাত্র ১৩ বলে ৫০-এ পৌঁছে বিপিএলের ইতিহাসের দ্রুততম অর্ধশতকের মালিক হয়ে গেলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের মাটিতেও এটি দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে মিরপুরে বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে এ ঝড় তুলেছেন নারাইন। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির ইতিহাসেই এটি যৌথভাবে দ্বিতীয় দ্রুততম অর্ধশতক।
নারাইনের আগে ১৩ বা এর কম বল খেলে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে অর্ধশতক আছে পাঁচ জনের। ১৩ বলে এর আগে করেছিলেন আর দুজন—সমারসেটের হয়ে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে মার্কাস ট্রেসকোথিক ও অস্ট্রিয়ার হয়ে লুক্সেমবার্গের বিপক্ষে মির্জা আহসান। ১২ বলে অর্ধশতক করে তালিকার শীর্ষে আছেন যৌথভাবে তিনজন—ভারতের যুবরাজ সিং (বিপক্ষ ইংল্যান্ড), মেলবোর্নের ক্রিস গেইল (বিপক্ষে অ্যাডিলেড) ও কাবুলের হজরতউল্লাহ জাজাই (বিপক্ষ বালখ)।
১৪৮ রান তাড়ায় কুমিল্লার শুরুটা হয়েছিল বেশ বাজে। প্রথম বলেই শরীফুল ইসলামের বলে ক্যাচ তোলেন লিটন দাস। তবে সে ওভারের তৃতীয় বলে ছয় মেরে ঝড়টা শুরু করেন ইনিংস উদ্বোধন করতে নামা নারাইন। সে ওভারে শরীফুলকে মারেন আরও ২টি চার।
পরের ওভারে আসেন মেহেদী হাসান মিরাজ। নারাইনের তোপে তো এক সময় মিরাজ যেন বল ফেলার জায়গাই খুঁজে পাচ্ছিল না। প্রথম বলে একটা সিঙ্গেল নিয়ে নারাইনকে স্ট্রাইক দেন ইমরুল কায়েস। পরের ৪ বলে ৩টি ছয়ের সঙ্গে নারাইন মারেন ১টি চার। লং-অফ আর কাভার দিয়ে নারাইন মারেন বাউন্ডারিগুলো।
প্রথম ২ ওভারেই কুমিল্লা তুলে ফেলে ৪৩ রান। বিপিএলে প্রথম ২ ওভারে এটি কোনো দলের সর্বোচ্চ স্কোর। পরের ২ ওভারে অবশ্য নারাইন স্ট্রাইকই পাননি। ইমরুল ১২ বল খেলেন একাই। তবে পঞ্চম ওভারে স্ট্রাইক পেয়েই আফিফকে প্রথম ২ বলে চার ও ছয় মারেন এই ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার।
পঞ্চম ওভারের শেষে নারাইনের রান ছিল ১২ বলে ৪৭। পাওয়ারপ্লে-র শেষ ওভারে স্ট্রাইক পান, প্রথম বলেই মৃত্যুঞ্জয়কে লং-অন দিয়ে ছয় মেরে অর্ধশতক পূর্ণ হয় তাঁর। এক বল পর মৃত্যুঞ্জয়কে আরেকটি চার মারার পর অবশ্য ক্যাচ তুলে ফিরেছেন এ বাঁহাতি। এর আগে করেছেন ১৬ বলে ৫৭ রান, ৫টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৬টি ছয়।
নারাইন ব্যাটিং করেছেন ৩৫৬.২৫ স্ট্রাইক রেটে। বিপিএলে কমপক্ষে ৫০ রান করেছেন, এমন ইনিংসের মধ্যেও এটিই সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট। এর আগের রেকর্ডটি ছিল থিসারা পেরেরার। ২০১৯ সালে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ২৬ বলে ৭৪ রানের ইনিংসে কুমিল্লার হয়েই খেলা পেরেরার স্ট্রাইক রেট ছিল ২৮৪.৬১।
নারাইনের রেকর্ডের দিনে রেকর্ড গড়েছে কুমিল্লাও। পাওয়ারপ্লে-তে ২ উইকেটে ৮৪ রান তুলে ফেলেছে তারা। বিপিএলের ইতিহাসে পাওয়ারপ্লে-তে সর্বোচ্চ স্কোর এটিই। এর আগে ২০১৯ সালে রংপুর রেঞ্জার্সের বিপক্ষে খুলনা টাইগার্স তুলেছিল ৮৩ রান।