প্রতিবছরই বান্দরবানে মারমা সম্প্রদায় ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে উদযাপন করে সাংগ্রাই উৎসব। পার্বত্য তিন জেলার ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টির পাহাড়ি জাতিসত্ত্বার মধ্যে মারমা জনগোষ্ঠী পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে বরণ করতে ব্যাঁপক উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে পালন করে থাকে সাংগ্রাই। করোনার কারণে গত ২ বছর কোন কর্মসুচীর আয়োজন করতে না পারলেও এবার সাংগ্রাই উৎসব উদযাপনের জন্য চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
প্রতি বছর নানা আয়োজনে মারমা সম্প্রদায় এই বাংলা নববর্ষ পালন করে থাকে, আর মারমা ভাষায় এই উৎসবকে বলা হয় সাংগ্রাই। মুলত তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে বান্দরবানেই মারমা সম্প্রদায়ের জনসংখ্য বেশি, তাই বান্দরবানে মুলত এই সাংগ্রাইকে ঘিরে কয়েকদিনব্যাপী চলে বর্ণিল আয়োজন । করোনার কারণে গেল ২বছর কোন কর্মসুচীর আয়োজন করতে না পারলেও এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভালো থাকায় নানা আয়োজনে উদযাপন হবে সাংগ্রাই।
এদিকে কদিন বাদেই সাংগ্রাই উৎসব তাই নতুন পোষাক আর নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে ভিড় পড়েছে স্থানীয় বাজারগুলোতে, জেলার বিভিন্ন উপজেলা এবং গ্রামের জনসাধারণ ভিড় জমিয়েছে স্থানীয় মার্কেটগুলোতে, শেষ মহুর্তের বেচাকেনায় দারুণ খুশি ক্রেতা আর বিক্রেতারা।
এদিকে বান্দরবানের সাংগ্রাই উদযাপন কমিটি ২০২২ এর সাধারণ সম্পাদক শৈটিং ওয়াই মারমা জানান, প্রতিছরের ন্যায় এবারও নতুন বছরকে বরণ আর পুরনোকে বিদায় জানিয়ে সাংগ্রাই উৎসবকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলতে বিভিন্ন কর্মসুচী হাতে নিয়েছে সাংগ্রাই উদযাপন কমিটি।
তিনি আরও বলেন, নানা আয়োজনে ১৩ এপ্রিল সকালে বান্দরবান রাজার মাঠ থেকে একটি বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে শুরু হবে সাংগ্রাই উৎসব আর শোভাযাত্রা শেষে অনুষ্টিত হবে বয়জ্যেষ্ঠ পূজা।
১৪ এপিল ভোরে মিনি ম্যারাথন দৌড়, পবিত্র বুদ্ধ মূর্তি স্মান আর ১৫ এপিল বিকেলে মৈত্রি পানি বর্ষন, ঐতিহ্যবাহী খেলাধূলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্টান, পিঠা উৎসব এর মাধ্যমে বান্দরবানে সমাপ্তি ঘটবে এই সাংগ্রাই উৎসবের।
বান্দরবানের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক মংনুচিং বলেন, বান্দরবানের সবচেয়ে বড় উৎসব হল সাংগ্রাই (নববর্ষ)। নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখা এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে মারমা সম্প্রদায় সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন করে। আর তার পাশাপাশি এই উৎসবে তারা মৈত্রী পানি খেলা, পিঠা বানানো ও বয়জ্যেষ্ঠদের পূজা করে থাকে।
এদিকে এই ধরণের বর্ণাঢ্য আয়োজনে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার জেরিন আখতার বলেন, বান্দরবানে সাংগ্রাইং, বিজু, বৈসু ,বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন পাড়া ও এলাকায় বিভিন্ন আকষর্ণীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়ে থাকে সপ্তাহব্যাপী আর এই উৎসবে অনেক দেশি বিদেশি পর্যটকদের উপস্থিতি দেখা যায়। সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।