রুমা উপজেলায় নতুন সংগঠন কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট ( কেএনএফ) আতঙ্কে মুয়ালপি পাড়া মারমা সম্প্রদায়ের ৫২টি পরিবার গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আতঙ্কিত হয়ে পালিয়ে আসা ৪০টি পরিবার রুমা শহরে মারমা ওয়ালফেয়ার ভবণে আশ্রয় নিয়েছেন। আরও ১২টি পরিবার নিজেদের আত্বীয়দের বাসায় আবার কেউ জঙ্গলে পালিয়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।
২8 জানুয়ারী শনিবার সন্ধ্যায় ১নং পাইন্দু ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মুয়ালপি পাড়া বাসিন্দারা পালিয়ে এসেছে বলে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন পাইন্দু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা।
তিনি জানিয়েছেন, পাহাড়ে সংগঠন কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট ( কেএনএফ) আতঙ্কিত হয়ে ৫২ টি পরিবার গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে এসেছে। পালিয়ে আসা পরিবার গুলো যে যার মতন করে ঠাই নিয়েছে। মুলায়পি গ্রামের ৪০টি পরিবার রুমা সদরে মারমা ওয়ালফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ভবণের আশ্রয় নিয়েছেন। আর আশ্রয়স্থল মধ্যে ২২ জন পুরুষ, ১৪জন নারী ও শিশু ৪ জন রয়েছে । পালিয়ে আসা লোকজনদের পাইন্দু ইউনিয়নের পক্ষ থেকে খাবার ও থাকার ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিত শান্ত না হওয়ার পর্যন্ত তারা শহরে অবস্থান করবে বলে জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, রুমা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার থেকে দুরত্ব মুয়ালপি পাড়া গ্রাম। ওই গ্রামের মারমা সম্প্রদায়ের ৫২টি পরিবারের বসবাস। দুর্গম এলাকার হওয়াতেই গ্রামের ভিতর দিয়ে কেএনএফ প্রতিনিয়ত চলাচল করত। তাদের এই চলাচলের কারণে গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে ঘর থেকে বের হতে পারছেন নাহ। এবং তাদের অত্যাচারে সবাই ভয়ে থাকেন। তাই তারা বন্দুক যুদ্ধে গেলে গ্রামবাসীরা টানা ৬ ঘন্টা হেটে শিশুসহ রুমা সদরে পৌছান।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি জানান, ওই গ্রামে কারবারী জামাইকে কেএনএফ ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে মারধর করে আহত অবস্থায় জঙ্গল থেকে তাকে উদ্ধার করেন গ্রামবাসীরা। ঘটনাটি পর ওই গ্রামে লোকজনদের মাঝে আতঙ্ক শুরু হয়। এবং গ্রাম ছাড়ার হুমকি দেন সন্ত্রাসীরা। গতকাল সন্ধ্যায় সন্ত্রাসীরা বন্দুক যুদ্ধে সময় গ্রামবাসীরা সবাই পালিয়ে আসে শহরে দিকে। পালিয়ে আসার অনেক পরিবার জঙ্গলে রয়েছেন। কোন কোন পরিবার তাদের আত্বীয়দের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন।
মুলায়পি পাড়া গ্রাম প্রধান (কারবারী) সানি অং মারমা বলেন, কয়েকদিন আগে আমার জামাইকে তুলে নিয়ে যায় কুকি-চীনরা। তাকে মারধর করে ফেলে রেখেছিল জঙ্গলে। এখন চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ রয়েছে।
তিনি বলেন, কুকি-চীনদের বন্দুক যুদ্ধ চলছিল। এবং তারা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া হুমকি দেয়। যে যেভাবে পারে গ্রাম ছেড়ে ভয়ে পালিয়ে এসেছি।
রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুন শিবলী বলেন, খবর পেয়ে গ্রামের লোকজন মাঝে পরিদর্শন করা হয়েছে। কেউ কেউ নিজেদের আত্বীয় বাসায় আবার কেউ জঙ্গলে রয়েছে। তবে আরো পালিয়ে আসা সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে আজ সকালে পালিয়ে আসা গ্রামবাসীদের মাঝে ফ্রী মেডিক্যাল ক্যাম্প শুরু করেছে সেনাবাহিনী। বয়স্ক ও শিশুদের মাঝে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।