৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পর্যটন জেলা বান্দরবান পৌরসভায় বসবাস করছে অসংখ্য মানুষ। তবে পর্যটন শহর হলেও বান্দরবান পৌরসভার অন্যতম জনগুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে বিভিন্নস্থানে নষ্ট হয়ে জনগনের দুর্ভোগের সীমা ছিল না। বান্দরবান সরকারী কলেজের সামনে থেকে জেলখানা, সিভিল সার্জন কার্যালয়, হাসপাতাল, জেরা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিসসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সংলগ্ন সড়কগুলো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় পৌরবাসির দুর্ভোগের সীমা ছিলনা। সড়কটির বেশির ভাগই রয়েছে ভাঙ্গা, ফলে রোদ থাকলে ধুলোয় একাকার আর বৃষ্টি হলে হয় প্রচুর কাদা। এসব সড়কে চলাচল করতে প্রতিদিনই নানা দুর্ঘটনার পাশাপাশি চরম ভোগান্তি পোহাতে হতো পৌরবাসীকে, তবে অবশেষে পৌরবাসির কথা চিন্তা করে পৌরসভার উদ্যাগে হাসপাতাল সড়কটি সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে।
বান্দরবান পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৬৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বান্দরবান সরকারী কলেজের সামনে থেকে গণপূর্ত বিভাগের সামনে পর্যন্ত প্রায় ৭৫০মিটার সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে,আর ৬ মাস মেয়াদে পুরো সড়কটি নতুনভাবে কাপেটিং করার কাজ বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্টান মিল্টন ট্রেডাস।
এদিকে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান শেষে সড়টির মেরামত কাজ শুরু হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে স্বস্তি ফিরেছে।
বান্দরবান পৌরসভার হাসপাতাল এলাকার বাসিন্দা মো.জুয়েল বলেন, বান্দরবান পৌরসভার কয়েকটি সড়কে চলাচল করা খুবই কষ্টকর আর তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতাল সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার করেনি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ, তবে দেরিতে হলেও সড়কটি মেরামত করার উদ্যোগ নেওয়ায় আমরা স্বস্তি পাচ্ছি।
বান্দরবান পৌরসভার কালাঘাটা এলাকার বাসিন্দা মো. শহীদ বলেন, প্রতিদিন কালাঘাটা থেকে সদরে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে। তবে সড়ক ভাঙ্গা থাকায় কষ্টের সীমা ছিল না। পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দীর্ঘদিন উন্নয়ন বঞ্চিত থাকায় এলাকার জনগণ কষ্টে জীবনযাপন করেছে। আমরা চাই প্রথম শ্রেণির পৌরসভা ও পর্যটন জেলা হিসেবে বান্দরবানের সব সড়ক যেন সুন্দর থাকে,সবাই যেন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে।
স্থানীয় ইজিবাইক চালক মো.জামাল বলেন, এতদিন চৌধুরী মার্কেট থেকে ক্যাচিংঘাটা পর্যন্ত আমরা যাত্রীদের নিয়ে গেলে প্রচুর কষ্ট ভোগ করতাম। প্রায় সময়ই গাড়ীর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যেত। কোনো রোগীকে সদর হাসপাতালে নিতে গেলে ঝাঁকিতে তার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যেত,গাড়ী থেকে নামার পর বিভিন্ন মন্দ কথা বলত। অবশেষে এবার হাসপাতাল সড়কটি মেরামত করা হচ্ছে, এতে যাত্রী আগের চেয়ে বাড়বে আর আমাদের ভোগান্তিও অনেকটাই কমবে।
বান্দরবান পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হুমায়ন কবির বলেন, কোভিড ১৯ এর একটি প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা কিছু অর্থ বরাদ্ধ পেয়েছি এবং মেয়র মহোদয়ের নিদের্শক্রমে দ্রুত সময়ে আমরা এই জনগুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল সড়কটির কাজ শেষ করে সাধারণ জনগণ যাতে নিবিঘ্নি চলাচল করতে পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এদিকে বান্দরবান পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র সৌরভ দাশ শেখর বলেন, আমি পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছে মাত্র কয়েকদিন হলো। দায়িত্ব নেয়ার পর আমি পৌরবাসির সেবার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আর জনগুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল সড়কটির সংস্কার কাজটি প্রাধান্য দিয়েই প্রথমেই এই সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করেছি। ভারপ্রাপ্ত মেয়র সৌরভ দাশ শেখর আরো বলেন, প্রায় ৬৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বান্দরবান সরকারী কলেজের সামনে থেকে গণপূর্ত বিভাগের সামনে পর্যন্ত প্রায় ৭৫০মিটার সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে এবং খুব দ্রুত সময়ে এই সংস্কার কাজ শেষ হলে জনগণের ভোগান্তী অনেকটাই কমে যাবে বলে আমার প্রত্যাশা।