অচেতন অবস্থায় উদ্ধার শিশুটির বোন ঢাকা থেকে মাগুরায়, মামলা হয়নি
সিএইচটি টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : 08-03-2025
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার আট বছরের শিশুটি এখনো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে আছে। তাঁর অবস্থা অপরিবর্তিত বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। সন্দেহভাজন হিসেবে ভুক্তভোগীর বোনের স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ চারজন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

আজ শনিবার সকালে মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় থাকায় মামলা রেকর্ড কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে। তার বোন ঢাকা থেকে এসেছেন। মা–বাবা ঢাকায় শিশুর কাছে অবস্থান করছেন। তবে এ ঘটনায় জড়িত থাকতে পারেন সন্দেহে ভুক্তভোগী শিশুর বোনের স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি ও ভাশুর পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, শনিবার সকালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিশুটি ঢাকায় শুক্রবার রাত থেকে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। তার অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি।

 

 

মাগুরায় শিশু ধর্ষণে জড়িতদের বিচারের দাবিতে থানা ঘেরাও করে 'ছাত্র জনতা'র বিক্ষোভ ।  ৭ মার্চ, সদর থানার সামনে, মাগুরা

মাগুরায় শিশু ধর্ষণে জড়িতদের বিচারের দাবিতে থানা ঘেরাও করে 'ছাত্র জনতা'র বিক্ষোভ । ৭ মার্চ, সদর থানার সামনে, মাগুরা

তদন্তসংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার দিবাগত রাতের কোনো একসময় বোনের শ্বশুরবাড়িতে ভুক্তভোগী শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে ধারণা পুলিশের। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সন্দেহভাজন চারজনের কেউই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেননি। তাঁরা অসংলগ্ন ও পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন। পুলিশ বলছে, অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে আনায় ভুক্তভোগী শিশুর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী শিশুর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুরুতর আহত ওই শিশুকে অচেতন অবস্থায় মাগুরার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে আনা হয়। সেখান থেকে ওই দিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাতে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শুক্রবার রাতে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

 

বৃহস্পতিবার শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাৎক্ষণিক পরীক্ষা করে যেটা দেখা গেছে, তার গলায় একটা দাগ রয়েছে। মনে হচ্ছে, কিছু দিয়ে চেপে ধরা হয়েছিল। শরীরের বেশ কিছু জায়গায় স্ক্রাচ (খোঁচা) রয়েছে। তার যৌনাঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁদের বাড়ি শ্রীপুর উপজেলায়। শিশুটি কদিন আগে তাঁর বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে মাগুরার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে আসেন।
এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে গতকাল শুক্রবার মাগুরায় মহাসড়ক অবরোধ ও থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতা। এ সময় থানার মূল ফটক ঘেরাও করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়। পরে সেনাবাহিনী এসে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। শুক্রবার জুমার নামাজের পর এ ঘটনা ঘটে।

শেয়ার করুন