বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মানিকগঞ্জ জেলা কমিটি বাতিলের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে নেমেছেন সংগঠনটির স্থানীয় নেতা–কর্মীদের একাংশ। আজ সোমবার বেলা সোয়া একটা থেকে সোয়া দুইটা পর্যন্ত মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের অদূরে মানরা এলাকায় তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী ও যানবাহনের শ্রমিকেরা।
৭২ ঘণ্টার মধ্যে কমিটি স্থগিত করার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বেলা সোয়া দুইটার দিকে সড়ক থেকে সরে যান আন্দোলনকারীরা। জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) আবদুল হামিদ খান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা কমিটি বাতিলের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। পরে যানবাহন চলাচল শুরু হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।
সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪২১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং সদস্যসচিব আরিফ সোহেল স্বাক্ষর করেন। এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করে নতুন কমিটির দাবি জানিয়ে আসছে সংগঠনটির একাংশ। এর ধারাবাহিকতায় আজ তাঁরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন।
এর আগে গত শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী জেলা কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন বিক্ষুব্ধরা। সংবাদ সম্মেলনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গঠিত কমিটি স্থগিত না করা হলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেন তাঁরা। সে অনুযায়ী তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে নামলেন।
জেলা ট্রাফিক পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা শহরের পোড়রা এলাকায় থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জেলা কমিটির একটি অংশের নেতা-কর্মীরা কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ–মিছিল করেন। তাঁরা মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের অদূরে মানরা এলাকায় যান। এরপর বেলা সোয়া একটার দিকে সেখানে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তাঁরা মহাসড়কের গাছের গুঁড়ি ফেলে কমিটি বাতিলের দাবিতে স্লোগান দেন। অবরোধের কারণে ঘটনাস্থলের উভয় পাশে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রায় ছয় কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও যানবাহনের শ্রমিকেরা। প্রায় এক ঘণ্টা পর বেলা সোয়া দুইটার দিকে আন্দোলনকারীরা মহাসড়ক থেকে সরে যান। এরপর যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
অবরোধ শেষে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মানিকগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলামের তিনতলা ভবনের কাঁচ ভাঙচুর করেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ছা্ত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত বেশ কয়েকজনকে কমিটিতে রাখা হয়েছে। অথচ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া অনেককে বাদ দিয়ে এমন ব্যক্তিদের পদ দেওয়া হয়েছে, যাঁরা কখনো সংগঠনের কাজে যুক্ত ছিলেন না। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গঠিত কমিটি স্থগিত না করা হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির আহ্বায়ক ওমর ফারুকের সঙ্গে। তিনি বলেন, জনসাধারণকে জিম্মি করে তাঁদের দুর্ভোগে ফেলে তাঁরা (আন্দোলনকারীরা) নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা করছে। বিষয়টি নিয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
