রাজশাহীতে ছাত্র আন্দোলনের দুটি ‘পকেট’ কমিটি বাতিলের দাবি, দুই সমন্বয়ককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
সিএইচটি টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : 31-01-2025
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

রাজশাহীতে সদ্যঘোষিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর ও জেলা কমিটি বাতিল করার দাবি জানিয়েছে একদল শিক্ষার্থী। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাহিন সরকার ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মারকেও অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে নগরের সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এসব ঘোষণা দেন এবং নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানান।  

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাজশাহী কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের রশিদ। তিনি মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুন-অর-রশিদের ছেলে। লিখিত বক্তব্যে জুবায়ের বলেন, ‘গত ‍১০ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত রাজশাহীর শিক্ষার্থী ও জনসাধারণ “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাজশাহী ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়” ব্যানারে রাজপথে লড়াই করেছে, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে অকুতোভয় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এ আন্দোলনে রাজশাহীর গর্বিত দুই কৃতী সন্তান আলী রায়হান ও সাকিব আঞ্জুম নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও ক্ষোভের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি’—একটি স্বার্থান্বেষী মহল জুলাই বিপ্লবের প্রকৃত নায়কদের মাইনাস করে, ৫ আগস্টের পর সুবিধাভোগী কিছু অনুপ্রবেশকারীর মাধ্যমে প্রহসনের ‘পকেট কমিটি’ গঠন করেছে।

জুবায়েরের দাবি, এই কমিটিগুলোতে প্রকৃত আন্দোলনের সাহসী, বিপ্লবী এবং নির্ভরযোগ্য নেতৃত্বকে বাদ দিয়ে আন্দোলনের চেতনাবিরোধী, বহিরাগত ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে। আন্দোলনবিরোধী এসব ব্যক্তি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাজারে চাঁদাবাজি, ক্ষমতার দখল এবং সুবিধা নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত।

 

অন্য শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ফাতিন মাহাদী ও মাহিন সরকার মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এই কমিটি গঠন করেছে। আরও উদ্বেগের বিষয়, এই কমিটির নেতৃত্বে এমন অনেককে রাখা হয়েছে, যাঁরা সরাসরি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এমনকি আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদের ছাত্র সংগঠনের মূল নেতৃত্বও এ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে। একজন হত্যা মামলার অন্যতম আসামিকে এ কমিটির শীর্ষ পদে রাখা হয়েছে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী কলেজের বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আবদুর রহিম, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাফিউল ইসলাম, রাজশাহী সিটি কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবু শাকিল আকাশ প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার ও তাঁর সহযোগী কিছু ভুয়া সমন্বয়কের নেতৃত্বে প্রকাশিত এ কমিটির ঘোষণার সঙ্গে তাঁদের প্রত্যক্ষ যোগসাজশ আছে—যা আমাদের ক্ষোভ ও হতাশা আরও গভীর করেছে। আমরা রাজশাহীর ছাত্রসমাজ এই অবৈধ পকেট কমিটি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটি বাতিল করার জন্য কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আরিফ সোহেল, আবদুল হান্নান মাসুদ, হাসনাত আবদুল্লাহ, উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ভাইয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। রাজশাহীর সর্বস্তরের ছাত্রসমাজ এই পকেট কমিটিকে সম্পূর্ণভাবে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছে এবং একই সঙ্গে রাজশাহীর মাটিতে মাহিন সরকার ও সালাউদ্দিন আম্মারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো।’

অভিযোগের বিষয়ে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, এ কমিটি করার ব্যাপারে তাঁদের কোনো হাত নেই। এটা কেন্দ্র যাচাই–বাছাই করে করেছে। আন্দোলনের মাঠে যাঁরা ত্যাগী, তাঁদেরই রাখা হয়েছে। অবাঞ্ছিত কতবারই তো করা হয়েছে। আজ যাঁরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তাঁরা অধিকাংশই ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সুতরাং এটা কেন করা হলো, তা নিয়ে কারও সংশয় থাকার কথা নয়।

 

শেয়ার করুন