সেই নারীর খোঁজ পাওয়া যায়নি তিন দিনেও
সিএইচটি টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : 12-01-2025
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

এক নারীসহ হোটেল থেকে বের হওয়ার ২ ঘণ্টার মাথায় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে খুন হন খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী ওরফে টিপু (৫৪)। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই লাপাত্তা রব্বানীর সঙ্গে থাকা ওই নারী। তিন দিনেও সেই নারীর খোঁজ পায়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ফলে কী কারণে সাবেক কাউন্সিলর রব্বানীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, সে রহস্যের জট এখনো খুলেনি।

গত বৃহস্পতিবার রাতে সমুদ্রসৈকতের সিগাল হোটেলের সামনে ঝাউবাগানের ভেতরে তৈরি করা কাঠের সেতুর মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয় রব্বানীকে। তাঁর বাড়ি খুলনা সিটির দৌলতপুরে। তিনি খুলনা সিটির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক কাউন্সিলর এবং খুলনা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি। গত ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের সঙ্গে তাঁকেও অপসারণ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

 

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে খুলনা সিটি করপোরেশনের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শেখ হাসান ইফতেখার এবং কক্সবাজার শহরের বাসিন্দা মেজবাউল হককে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। গতকাল শনিবার দুজনকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। তবে আজ রোববার বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস খান প্রথম আলোকে বলেন, গোলাম রব্বানী হত্যা মামলায় আজ বিকেল পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এক নারীর সন্ধান চলছে। তবে তাঁর সন্ধান মেলেনি।

তদন্ত–সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, খুলনা থেকে কৌশলে কক্সবাজারে এনে হত্যা করা হয়েছে গোলাম রাব্বানীকে। অন্ধকার নির্জন সৈকতে মাথা নিশানা করে প্রশিক্ষিত কোনো বন্দুকবাজ তাঁকে গুলি করেন। হত্যায় ব্যবহৃত নাইন এমএম পিস্তলটি মিয়ানমারের তৈরি বলে জেনেছে তদন্ত–সংশ্লিষ্টরা।

 

পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত শুক্রবার বিকেলে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত গোলাম রব্বানীর ভগ্নিপতি মো. ইউনুস আলী শেখ। তিনি খুলনার রূপসা উপজেলার ঘাট বুথ ইউনিয়নের বাসিন্দা। মামলার এজাহারে গোলাম রব্বানীকে মাথায় গুলি করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

পুলিশ জানায়, শেখ হাসান ইফতেখার ও গোলাম রব্বানী দুজন গত বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজার শহরের কলাতলী এলাকায় গোল্ডেন হিল হোটেল ওঠেন। হোটেলের রেজিস্ট্রারে গোলাম রব্বানীর সঙ্গে এক নারীর নাম উল্লেখ রয়েছে। ঘটনার পর থেকে ওই নারী আত্মগোপনে রয়েছেন। হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে র‍্যাবের একজন কর্মকর্তা বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৩১ মিনিটে ওই তরুণীসহ হোটেল থেকে বের হন রব্বানী। এরপর রাত সাড়ে আটটায় তিনি খুন হন।

তদন্ত–সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, পরিকল্পিতভাবে মাথায় গুলি করে গোলাম রব্বানীকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তার অনুসন্ধান চলছে। গোলাম রব্বানীর পরিবারের অভিযোগ, খুলনাকেন্দ্রিক একাধিক গোষ্ঠী এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।


 

শেয়ার করুন