কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে ১০৫ কেন্দ্রে ৫০ হাজার ৩১০ ভোট পেয়ে মেয়র পদে নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত বে-সরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী টেবিল ঘড়ি প্রতীকের মনিরুল হক সাক্কু পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৯৬৭ ভোট। ফলে ৩৪৩ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন রিফাত।
এছাড়া মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৯ হাজার ৯৯ ভোট।
গতকাল ১৫ জুন (বুধবার) রাত সাড়ে নয়টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ শাহেদুন্নবী চৌধুরী বেসরকারি এ ফল ঘোষণা করেন।
এর আগে কুমিল্লা নগরীর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তন থেকে বিকেল ৫টায় ফলাফল ঘোষণা শুরু করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। প্রায় চার ঘণ্টার ফল ঘোষণার সময়ে রিফাত এবং সাক্কু একে অপরকে ফলাফলে টপকে ছিল।
তীব্র উত্তেজনার মধ্যে ১০১টি কেন্দ্রের ফল ঘোষণার পর দেখা যায় মনিরুল হক সাক্কু ৬ শতাধিক ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। ঠিক সেই মুহূর্তে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় ফল ঘোষণা। ফলাফল ঘোষণার কেন্দ্রে তখন দুই প্রার্থীর সমর্থকেরাই বিজয় মিছিল করতে থাকেন এবং নিজ নিজ প্রার্থীর জয় হয়েছে বলে দাবি করতে থাকেন।
এসময় হলজুড়ে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, দেখা দেয় ব্যাপক বিশৃঙ্খলা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেক চেষ্টা করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিলেন না।
তবে শেষ পর্যন্ত প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
এরপর খুব দ্রুত চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। অল্প সময়ের ওই ঘোষণায় একবারেই ১০৫ কেন্দ্রের ফল ঘোষণা করে দেন তিনি। সেখানে কেবল প্রার্থীদের চূড়ান্ত ভোট সংখ্যা এবং ব্যবধান উল্লেখ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এরপর তিনি নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন বলে ঘোষণা করেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘোষিত বেসরকারি এ ফল প্রত্যাখ্যান করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। তাঁর দাবি, শেষ মুহূর্তে ফলাফল পাল্টে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সাক্কু দাবি করেন, তাদের নিজেদের হিসাবে কেন্দ্র থেকে আসা ফল অনুযায়ী টেবিল ঘড়ি প্রতীক ৯৮০ ভোটে নৌকার চেয়ে এগিয়ে আছে। এ ব্যাপারে তিনি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে আজ সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট নেওয়া হয়।
কুসিকের ২৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। এদের মধ্যে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯২ জন নারী ভোটার এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার দুজন।
নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন তিন প্রার্থী। তারা হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত, বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা সাবেক মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু এবং বিএনপির আরেক বহিষ্কৃত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার।