ফরিদপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে সদর উপজেরার কানাইপুর ইউনিয়নের ফুসরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে ৩০টি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এতে আহত হয়েছেন অন্তত আটজন। এর মধ্যে তিনজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ফুসরা গ্রামটি কানাইপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত। এ গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন আক্কাস মাতুব্বর। তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন হাশেম খান। তিনি ওই ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রোববার বিকেলে এলাকার একটি পুকুরে মাছ ধরা নিয়ে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে রাতেই ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাফর ইকবাল ঘটনাস্থলে যান এবং দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর কাছে দুই পক্ষের লোকজন প্রতিশ্রুতি দেন, তাঁরা আর সংঘর্ষে জড়াবেন না।
তবে এলাকায় উত্তেজনা অব্যাহত ছিল। আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে হাশেম খানের সমর্থকেরা আক্কাস মাতুব্বর ও তাঁর সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা করে ভাঙচুর করেন। এ সময় গরু-ছাগল লুটপাট করা হয়। পরে আক্কাস মাতুব্বরের সমর্থকেরা সংগঠিত হয়ে হাশেম খানের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। এ সময় অন্তত ৩০টি বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
পরে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা–পুলিশ, সেনাসদস্য ও র্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন জানান, আক্কাস মাতুব্বর ও হাশেম খানের মধ্যে এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আগে থেকেই বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে আবারও সংঘর্ষ হয়েছে।
আক্কাস মাতুব্বর বলেন, ‘রোববার রাতে পুলিশের মধ্যস্থতায় আমরা সংঘর্ষে লিপ্ত হব না বলে কথা দিয়েছিলাম। আমি তা মেনে নিলেও হাশেম খান তা মানেননি । তাঁর সমর্থকেরা অতর্কিত আজ সকালে আমার বাড়িসহ আমার সমর্থকদের বাড়িতে হামলা করেন। তাঁরা বাড়ি ভাঙচুর ও গরু–ছাগল লুট করেছেন।’
এই অভিযোগ অস্বীকার করে হাশেম খান বলেন, ‘আক্কাসের সমর্থকেরা আমার বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করেছেন।’
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদ উজ্জামান আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় কোনো পক্ষ অভিযোগ দেয়নি।