ইলন মাস্ক: খ্যাপাটে ব্যবসায়ী থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ডান হাত’
সিএইচটি টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : 18-02-2025
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

টাইম ম্যাগাজিনের সর্বশেষ প্রচ্ছদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে বিশেষ ক্ষমতা পাওয়া ইলন মাস্ককে দেখা গেছে। লাল রঙে আচ্ছাদিত প্রচ্ছদে দেখা যাচ্ছে, ইলন মাস্ক হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্টের রেজল্যুট ডেস্কের পেছনে বসে আছেন, হাতে কফির পেয়ালা।

এই ছবি যেন ভবিষ্যতের কথা বলে। হতে পারে, বিশ্বের একজন শীর্ষ ব্যবসায়ী ধীরে ধীরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুর দিকে হাঁটছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ইলন মাস্কের ফোনালাপ হয়েছে। এই ঘটনায় ইলন মাস্ক সম্পর্কে বাংলাদেশিদের আগ্রহ আরও বেড়েছে।

বাস্তবতা হলো, ইলন মাস্ক এখন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান মানুষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডান হাত। তাঁর পরিচয় এখন আর নিছক ব্যবসায়ীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ধারণা করা হচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদী ও বিশ্বায়নবিরোধী যে ধারার রাজনীতি শুরু হয়েছে, ইলন মাস্ক হয়তো তার ভবিষ্যৎ কান্ডারি।

ট্রাম্প প্রশাসন এই ধনকুবের ইলন মাস্ককে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন দপ্তর ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সিতে (ডিওজিই) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে বসিয়েছেন। এ দপ্তরকে বাড়তি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

 

ব্যবসা শুরুর ২৫ বছরে সেরা ধনী

ইলন মাস্ক

ইলন মাস্কফাইল ছবি: রয়টার্স

প্রযুক্তি উদ্যোক্তা হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত ইলন মাস্ক। তাঁর ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব বিস্মিত করার মতো। স্পেসএক্স প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসেন ইলন মাস্ক। এখন বিল গেটস, স্টিভ জবসসহ অন্যদের সঙ্গে তাঁর তুলনা করা হয়। ১৯৯৫ সালে তিনি ব্যবসা শুরু করেন। ২৫ বছরের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের হয়ে ওঠেন তিনি। ২০২০ সাল থেকেই তিনি শীর্ষ পাঁচ ধনীর মধ্যে আছেন। তাঁর বর্তমান সম্পদমূল্য ৩৯৪ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ৩৯ হাজার ৪২০ কোটি ডলার। সেই সঙ্গে নিজের খেয়ালি আচরণের জন্যও তিনি বিখ্যাত।

টেসলাসহ ইলন মাস্ক মোট সাতটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন। টেসলার ১২ শতাংশ শেয়ারের মালিক তিনি। এ ছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক কোম্পানি এক্সএআইয়ের ৫৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক তিনি।

১৯৯৫ সালে ইলন মাস্ক ও তাঁর ছোট ভাই কিম্বল মাস্ক জিপ ২ নামে একটি কোম্পানি শুরু করেন। জিপ ২ সংবাদপত্রের কাছে লাইসেন্সযুক্ত সফটওয়্যার সরবরাহ করত। ১৯৯৯ সালে কমপ্যাক কম্পিউটার করপোরেশনের কাছে ৩০০ মিলিয়ন বা ৩০ কোটি ডলারে জিপ ২ বিক্রি করে দেন মাস্ক। এ ঘটনা মাস্কের জন্য নতুন সম্ভাবনা খুলে দেয় এবং তিনি এক্স. কম শুরু করেন।

হ্যারিস ফ্রিকার, এড হো ও ক্রিস্টোফার পেইনের সঙ্গে ইলন মাস্ক এক্স. কম প্রতিষ্ঠা করেন। এটা ছিল অনলাইন ব্যাংক। পরবর্তী সময়ে তা কনফিনিটি ইনকরপোরেটেডের সঙ্গে একীভূত হয়। এক্স. কম ও কনফিনিটি ইনকরপোটেডে এক হয়ে পেপালের জন্ম হয়। পেপাল অনলাইন পেমেন্টের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলোর একটি। কিন্তু কনফিনিটির সহপ্রতিষ্ঠাতা পিটার থিয়েলসহ মাস্ক ও অংশীদারেরা ২০০২ সালে ই-বেতে বিক্রি করে দেন। পেপালকে একপর্যায়ে ১৯৯৯ সালের ‘সবচেয়ে বাজে ব্যবসায়িক আইডিয়া’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল। ২০০০ সালে হানিমুনে থাকাকালীন মাস্ককে সিইও পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

ইলন মাস্ক

ইলন মাস্করয়টার্স

পেপাল থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর ইলন মাস্ক ভবিষ্যতের বৈদ্যুতিক গাড়ির দিকে দৃষ্টি দেন। ২০০৩ সালে তিনি কোম্পানিটি চালু করেন। টেসলা মোটরসের মূল লক্ষ্য ছিল অটোমোটিভ শিল্পকে জ্বালানি ব্যবহার থেকে বের করে বিদ্যুৎনির্ভর করে তোলা। ২০০৮ সাল থেকে ইলন মাস্ক টেসলার সিইও। টেসলার মডেল-৩ বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় বৈদ্যুতিক গাড়ি। বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ এই মডেলের গাড়ি বিক্রি হয়েছে।

উদ্যোক্তাদের জন্য তাঁর পরামর্শ, সফলতার শর্টকাট রাস্তা নেই। সফল হতে পরিশ্রম করতে হবে ও নিজের লক্ষ্য অটুট থাকতে হবে।

ইলন মাস্কের আরেকটি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। প্রতিষ্ঠানটি মূলত পুনরায় ব্যবহারযোগ্য রকেটের জন্য পরিচিত হয়ে উঠেছে। এই প্রতিষ্ঠানের রকেট ডিজাইনের জন্য মার্কিন বিমানবাহিনী ও নাসার সঙ্গে বড় চুক্তি হয়। ২০২৫ সালের মধ্যে মাস্ক নাসার সহায়তায় মহাকাশে নভোচারী পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন। গত ২০ বছরে স্পেসএক্স রকেট উৎক্ষেপণের ব্যর্থতা ও স্টারশিপ বিস্ফোরণের ঘটনা মোকাবিলা করেছে। স্পেসএক্সের নাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে।

 

২০০৬ সালে চাচাতো ভাইদের সঙ্গে মিলে মাস্ক সৌরশক্তিভিত্তিক কোম্পানি সোলারসিটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানে মাস্ক প্রধান অর্থদাতা। গত দশকে প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ আবাসিক সোলার কোম্পানি হয়ে ওঠে এটি। মাস্ক টেসলার মাধ্যমে ২০১৬ সালে সোলারসিটিকে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার বা ২৬০ কোটি স্টকের বিনিময়ে কিনে নেন।

২০২২ সালে ৪৪ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে টুইটার কেনার উদ্যোগ নেন ইলন মাস্ক। পরে দীর্ঘ ছয় মাস নানা নাটকীয়তার শেষে টুইটারের নিয়ন্ত্রণ নেন ইলন মাস্ক। এ ছাড়া মাস্ক ২০১৫ সালে অলাভজনক কোম্পানি ওপেনএআই প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৬ সালে তিনি নিউরালিংক ও বোরিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।

ইলন মাস্ক সামগ্রিকভাবে একজন সফল ব্যবসায়ী। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন। উদ্যোক্তাদের জন্য তাঁর পরামর্শ, সফলতার শর্টকাট রাস্তা নেই। সফল হতে পরিশ্রম করতে হবে ও নিজের লক্ষ্য অটুট থাকতে হবে।

কোথায় কোথায় বিনিয়োগ

ইলন মাস্ক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ করেছেন, তার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র, চীন, কানাডা, জার্মানি ও ফ্রান্স। টেসলা, স্পেসএক্স, নিউরালিঙ্ক ও বোরিংয়ের মতো তাঁর প্রধান কোম্পানিগুলোর মূল কার্যালয় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত। এ ছাড়া তিনি ব্যক্তিগতভাবেও যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করেছেন। টেসলার একটি বিশাল কারখানা আছে চীনে, যা কোম্পানিটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারখানা। চীনের বাজারে টেসলার চাহিদা ব্যাপক, তাই মাস্ক এই বাজারে আরও বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছেন। এ ছাড়া জার্মানির গ্রুয়েনহাইডে টেসলার একটি নতুন ‘গিগাফ্যাক্টরি’ রয়েছে, যেখানে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা হয়। মাস্ক জার্মানির বাজারেও বড় ধরনের বিনিয়োগ করেছেন। পিতৃভূমি কানাডায় তিনি বিনিয়োগ করেছেন। মাস্ক ফ্রান্সের কিছু প্রযুক্তি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছেন বলে জানা যায়। তবে এসব বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য খুব বেশি পাওয়া যায়নি।

অগ্রগামী চিন্তক: বৈদ্যুতিক গাড়ির স্বপ্ন দেখান

প্রায় আড়াই দশক আগেই ইলন মাস্ক ইন্টারনেটের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারণা করতে পেরেছিলেন। ১৯৯৮ সালে সিবিএস সানডে মর্নিং অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাস্ককে ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। তাঁর উত্তর ছিল এমন: এটি হবে বিপ্লবী মাধ্যম; একসময় সব প্রচলিত মাধ্যমই ইন্টারনেটে ঢুকে যাবে। তিনি আরও বলেছিলেন, ইন্টারনেট সব মাধ্যমের যোগফল। এটি হবে যোগাযোগমাধ্যমের সর্বশেষ রূপ। মুদ্রিত, সম্প্রচার ও রেডিও—সবই ইন্টারনেটে মিশে যাবে। এটি প্রথম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন দ্বিমুখী যোগাযোগমাধ্যম, যেখানে ব্যবহারকারীরা নিজের ইচ্ছেমতো কনটেন্ট নির্বাচন করতে পারবেন।

মাস্কের অগ্রগামী চিন্তার আরেকটি দিক হলো বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবসা। ২০০৩ সালেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, ভবিষ্যৎ যুগ হবে বৈদ্যুতিক গাড়ির যুগ। সে কারণে টেসলা প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।

তখন মাস্কের কথা অনেকের কাছে প্রলাপের মতো মনে হলেও শেষমেশ তা-ই সত্য হয়। তাঁর প্রতিষ্ঠিত স্টার লিংক এখন সারা বিশ্বে উচ্চগতির স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা দেয়। সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ইলন মাস্কের ফোনালাপ হয়েছে। ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার দিকে তাঁদের মধ্যে ফোনে কথা হয়। এই ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় ভবিষ্যৎ সহযোগিতার ক্ষেত্র অন্বেষণ এবং বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালুর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বাংলাদেশ নিয়ে স্টারলিংক আগ্রহ দেখিয়েছেন।

মাস্কের অগ্রগামী চিন্তার আরেকটি দিক হলো বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবসা। ২০০৩ সালেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, ভবিষ্যৎ যুগ হবে বৈদ্যুতিক গাড়ির যুগ। সে কারণে টেসলা প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। তাঁর টেসলা এখন বৈদ্যুতিক গাড়ি জনপ্রিয় করার পথ দেখাচ্ছে।
অনেক বিশ্লেষকেই মনে করছেন, ট্রাম্পের হাত ধরে যে নতুন জমানা আসছে, ইলন মাস্ক হতে পারেন তার ভবিষ্যৎ কান্ডারি। তাঁর সঙ্গে আছেন বিবেক রামাস্বামীর মতো তরুণ ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ী। এই মানুষেরা চিন্তায় আগের যুগের ডেমোক্র্যাট বা রিপাবলিকানদের মতো নয়। তাঁরা হবেন নতুন ধারার পথিকৃৎ।

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্র

ইলন মাস্ক ১৯৭১ সালের ২৮ জুন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিন ভাই–বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। তাঁর বাবা ছিলেন প্রকৌশলী, তাঁর মা মডেল ও পুষ্টিবিদ। তাঁর ভাই কিম্বল মাস্ক পরিবেশবাদী ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট এবং বোন টোসকা মাস্ক পুরস্কার বিজয়ী পরিচালক ও প্রযোজক।

 

ইলন মাস্ক

ইলন মাস্কফাইল ছবি: রয়টার্স

ইলন মাস্ক স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে প্রায় এক বছর আগে স্কুলজীবন শুরু করেন। তাঁর স্কুলজীবন শুরু হয় ওয়াটারক্লুফ হাউস প্রিপারেটরিতে। সেখান থেকে পরে প্রিটোরিয়া বয়েজ হাইস্কুলে যান। ইলন মাস্কের বয়স যখন ১০ বছর, তখন তার মা-বাবার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। অনেক মেধাবী হলেও স্কুলে তাঁকে বেশ কঠিন সময় পার করতে হয়েছিল। আফ্রিকান সংস্কৃতির খুব কম বন্ধু আছে। বড় হয়েও তিনি অনেক প্রতিকূলতার মুখে পড়েন। তবে তিনি মনে করতেন, জীবনে বড় হতে হলে প্রতিকূলতা আসবেই।

হাইস্কুল জীবন শেষে ইলন মাস্ক পদার্থবিজ্ঞান ও অর্থনীতিতে আগ্রহী হন। তিনি কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে দুই বছর পড়াশোনা করেন। এই দুই বছর পর পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান। সেখানে তিনি দুটি মেজর বিষয়ে ডিগ্রি নেন। ইলন মাস্ক পেনসিলভানিয়ার ওয়ার্টন স্কুল থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি অর্থনীতিতে ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রি অর্জন করেন। এই দুটি ডিগ্রি ইলনের ক্যারিয়ার গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।

সায়েন্স ফিকশন সিনেমায় আগ্রহ বেশি

ইলন মাস্ক তিনবার বিয়ে করেছেন; এ ছাড়া বিভিন্ন সময় আরও কয়েকজন নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। তাঁর মোট সন্তান ১২টি। তাঁর প্রথম স্ত্রী ছিলেন লেখক জাস্টিন উইলসন। প্রথম স্ত্রীর ঘরে পাঁচ সন্তান আছে। তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয় ২০০৮ সালে। এরপর তিনি দুবার অভিনেত্রী তালুলাহ রাইলিকে বিয়ে করেন এবং তাঁদের দুবারই বিবাহবিচ্ছেদ হয়। বর্তমানে তিনি কারও সঙ্গে সংসার করছেন না। তাঁর তৃতীয় স্ত্রী কানাডীয় সংগীতশিল্পী গ্রাইমসের ঘরের সন্তানের নাম এক্স, যাকে এখন ইলন মাস্কের সঙ্গে হোয়াইট হাউসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা যায়। সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের সময়ে এক্স উপস্থিত ছিলেন। যা সারা বিশ্বে বেশ আলোচনার সৃষ্টি করেছে।

ইলন মাস্কের বিলাস-ব্যসন নিয়ে তেমন কিছু জানা যায় না। রক সংগীতের প্রতি ইলন মাস্কের দুর্বলতা আছে। মাঝেমধ্যেই টুইটারে তাঁকে পছন্দের গানের কিছু অংশ পোস্ট করতে দেখা যায়।

তবে ইলন মাস্কের বিলাস-ব্যসন নিয়ে তেমন কিছু জানা যায় না। তবে রক সংগীতের প্রতি ইলন মাস্কের দুর্বলতা আছে। মাঝেমধ্যেই টুইটারে তাঁকে পছন্দের গানের কিছু অংশ পোস্ট করতে দেখা যায়। চলচ্চিত্র দেখতেও ভালোবাসেন টেসলার এই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। সায়েন্স ফিকশন ঘরানার চলচ্চিত্র তাঁর পছন্দের তালিকায় শীর্ষে। বইও পড়েন তিনি। ইলন মাস্কের প্রিয় লেখকের তালিকা বেশ দীর্ঘ। এর মধ্যে জে আর আর টলকিন, ডগলাস অ্যাডামস, নিল গেইম্যানের মতো বিখ্যাত লেখকেরা রয়েছেন।

ইলন মাস্ক

ইলন মাস্কছবি: রয়টার্স

কাজপাগল মানুষ হিসেবে ইলন মাস্কের বেশ পরিচিতি আছে। টেসলার পাশাপাশি স্পেসএক্সসহ নিজের অন্য সংস্থাগুলোতেও তিনি সমান সময় দেন। ঘুমানোর জন্য খুব কম সময় পান বলে বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তিনি। মহাকাশ ভ্রমণ, বই পড়া, চলচ্চিত্র দেখা, গান শোনা ও প্রযুক্তিবিষয়ক নতুন কিছু করার চেষ্টাই হলো ইলন মাস্কের প্রধান শখ। নতুন কিছু তৈরি করার ক্ষেত্রে তিনি সব সময় বেশ আগ্রহী।

ইলন মাস্ক বিভিন্ন সময় ভালো লাগা ও মন্দ লাগার কথা জানিয়েছেন। তাঁর অনেক বিষয় পছন্দ হলেও অপছন্দ করেন এমন জিনিসের তালিকাও বেশ দীর্ঘ। তাঁর অপছন্দগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মিথ্যা কথা বলা ও অতিরিক্ত সমালোচনা করা। কোনো কাজ ফেলে রাখাকেও তিনি অপছন্দ করেন।

সূত্র: ফোর্বস, টাইম ম্যাগাজিন, দ্য ইকোনমিস্ট
 

শেয়ার করুন