ফিলিস্তিনের গাজায় হামাসের হাতে জিম্মি থাকা ব্যক্তিদের দেশে ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের কাছে সহায়তা চেয়েছে তাঁদের পরিবার। এ লক্ষ্যে হামাসের সঙ্গে একটি চুক্তিতে যেতে ইসরায়েল সরকারের ওপর চাপ দেওয়ার জন্য ওই দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
গত সোমবার এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর ও কাতারের প্রস্তাবিত একটি যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তিতে অনুমোদন দিয়েছে তারা। পরদিন মঙ্গলবার হামাসের হাতে জিম্মি থাকা ব্যক্তিদের পরিবারের সংগঠন ‘হোস্টেজ অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম’ বিদেশি সরকারের প্রতি তাদের আহ্বান জানায়।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামলা চালায় হামাস। ওই হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। এ ছাড়া ইসরায়েল থেকে প্রায় আড়াই শ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যান হামাস সদস্যরা। জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলি ছাড়াও বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিকেরা রয়েছেন। এর পর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে নিহত হয়েছেন ৩৪ হাজার ৮৪৪ জন।
ইসরায়েল ছাড়া অন্য যেসব দেশের নাগরিক এখনো হামাসের হাতে জিম্মি, ওই দেশগুলোর দূতাবাসে চিঠি পাঠায় হোস্টেজ অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম। তাতে বলা হয়, ‘বর্তমানে সংকটের সময় চলছে। এরই মধ্যে জিম্মিদের মুক্তির বাস্তব সুযোগ তৈরি হয়েছে। তাই এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে আপনাদের সরকার যেন (হামাসের সঙ্গে) চুক্তির প্রতি সমর্থন জানায়।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘একটি চুক্তি নিশ্চিত করার জন্য ইসরায়েল সরকার ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের ওপর আপনাদের প্রভাব খাটানোর এখনই সময়। এমন কোনো চুক্তি হলে আমাদের প্রিয়জনেরা শেষ পর্যন্ত বাড়ি ফিরতে পারবে।’
হামাসের হাতে জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলি ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও রাশিয়ার নাগরিকেরা রয়েছেন। এর মধ্যে গত নভেম্বরে সাত দিনের যুদ্ধবিরতির সময় বেশ কয়েকজনকে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপরও এখনো গাজায় ১২৮ জন জিম্মি। তাঁদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা ইসরায়েলি বাহিনীর।
এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে ইসরায়েলজুড়ে চলছে বিক্ষোভ। সোমবার রাতেও জেরুজালেম ও তেল আবিবের রাজপথে বিক্ষোভ–সমাবেশ হয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের যেসব শর্তে হামাস রাজি হয়েছে, সেগুলো মেনে নেয়নি ইসরায়েল। এরপরও চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করতে মঙ্গলবার একটি প্রতিনিধিদল মিসরের রাজধানীয় কায়রোয় পাঠিয়েছে তারা।