ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁকে তাঁর স্ত্রী ব্রিজিত মাখোঁ দুই গালে চড় মেরেছেন—কয়েক সেকেন্ডের এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু মাখোঁর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, এমন কিছু ঘটেনি। তবে একটি সূত্র দাবি করেছে, ভাইরাল মুহূর্তটির আগে তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হচ্ছিল।
গতকাল রোববার ভিয়েতনাম দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফর শুরু করেছেন এমানুয়েল মাখোঁ। ভাইরাল ভিডিওটি রাজধানী হ্যানয়ের নই বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ থেকে নামার আগমুহূর্তের বলে জানা গেছে।
সংক্ষিপ্ত ভিডিওটিতে উড়োজাহাজের দরজা খোলার সঙ্গে মাখোঁকে দরজা বরাবর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কয়েক সেকেন্ড পর ব্রিজিতের দুটি হাত পাশ থেকে হঠাৎ প্রেসিডেন্টের মুখে পড়তে দেখা যায়, যা অনেকটা চপেটাঘাত বলে মনে হয়েছে।
ঘটনার আকস্মিকতায় মাখোঁকে হতভম্ব মনে হয়। তবে মুহূর্তের মধ্যে নিজেকে সামলে নেন তিনি এবং বাইরে উপস্থিত সাংবাদিকদের দিকে হাত নেড়ে অভিবাদন জানান।
উড়োজাহাজ থেকে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় মাখোঁ স্ত্রীকে ধরার জন্য হাত বাড়িয়ে দেন। কিন্তু ব্রিজিত তাঁর হাত না ধরে নিজেই রেলিং ধরে নামেন।
আজ সোমবার ফরাসি প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন ও কার্যালয় এলিসি প্রাসাদ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে মাখোঁকে উড়োজাহাজে স্ত্রীর চড় দেওয়ার বিষয়টি নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সরাসরি নাকচ না করে ওই ঘটনার গুরুত্ব কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছেন সংশ্লিষ্ট ফরাসি কর্মকর্তারা।
মাখোঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক কর্মকর্তা ফ্রান্সে সিএনএনের সহযোগী টেলিভিশন চ্যানেল বিএফএম টিভিকে বলেন, ‘এই দম্পতির মধ্যে তখন হালকা কথা–কাটাকাটি হচ্ছিল।’ এলিসি প্রাসাদের একটি সূত্র এই ঘটনাকে ‘ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ (ডানে) ও তাঁর স্ত্রী ব্রিজিত মাখোঁ। ভিয়েতনামে এক রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে, ২৬ মে ২০২৫ছবি: রয়টার্স
সূত্রটি আজ সিএনএনকে বলেছে, ‘সফর শুরুর আগে প্রেসিডেন্ট ও তাঁর স্ত্রী আরাম করে সময় কাটাচ্ছিলেন এবং মজাচ্ছলে একে অপরের সঙ্গে ঠাট্টামশকরা করছিলেন।’
সূত্রটি আরও বলেছে, ‘ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকদের গুজব ছড়াতে এর চেয়ে বেশি কিছু দরকার ছিল না।’ তিনি অভিযোগ করেন, রাশিয়ার পক্ষে যারা অনলাইনে অপপ্রচার চালায়, তারা খুব দ্রুত ঘটনাটিকে বিকৃত করে বিতর্ক তৈরি করেছে।
২০২২ সালে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে ইউক্রেনকে রক্ষার্থে সমন্বিত ইউরোপীয় পদক্ষেপ গড়ে তোলায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন এমানুয়েল মাখোঁ। এ কারণে তিনি রাশিয়ার বিভিন্ন অপপ্রচারের মুখোমুখি হচ্ছেন।
স্ত্রীর চড় খাওয়ার পর উড়োজাহাজ থেকে নামছেন এমানুয়েল মাখোঁ। হ্যানয়ের নই বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে, ২৫ মে ২০২৫ছবি: রয়টার্স
হ্যানয়ের ঘটনার কয়েক দিন আগে মাখোঁর বিরুদ্ধে আরেকটি অপপ্রচার ছড়ানো হয়েছিল। চলতি মাসের শুরুর দিকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে তিনি কোকেনের একটি প্যাকেট নিজের পকেটে ঢোকান বলে দাবি করা হয়েছিল।
ওই ভিডিওটি কিয়েভে যাওয়ার পথে ট্রেনে ধারণা করা। তখন সেখানে মাখোঁর সঙ্গে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মের্ৎস এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ছিলেন। এলিসি প্রাসাদ থেকে ভিডিওটি ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, এটি কোকেনের প্যাকেট নয়, একটি টিস্যু।