আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ২১ মে থেকে ২৭ মে পর্যন্ত ৭ দিন রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রির প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ সময় ৩১ মে থেকে ৬ জুন পর্যন্ত চলাচলকারী আন্তনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। এবারও ঈদযাত্রার শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে।
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, রেলের পশ্চিমাঞ্চলের (রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগ) ট্রেনগুলোর অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে সকাল ৮টায়, চলবে বেলা ২টার আগপর্যন্ত। বেলা ২টা থেকে পূর্বাঞ্চলের (ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগ) টিকিট বিক্রি শুরু হবে। এবার ফিরতি যাত্রায় রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হবে ৩০ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত। আগামী ৭ জুন সম্ভাব্য ঈদের দিন ধরে টিকিট বিক্রির এই সূচি তৈরি করা হয়েছে।
রেলের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সংস্থাটির কর্মকর্তারা নিজেরা বৈঠক করে প্রাথমিক সূচি তৈরি করেছেন। আগামী সোমবার বিদ্যুৎ ভবনে ঈদযাত্রা নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিতে পারেন।
রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রির সূচি অনুসারে, ২১ মে বিক্রি করা হবে ৩১ মে চলাচলকারী ট্রেনের টিকিট। ১ জুনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হবে ২২ মে। একইভাবে ২৩ মে বিক্রি হবে ২ জুনের, ২৪ মে বিক্রি হবে ৩ জুনের, ২৫ মে বিক্রি হবে ৪ জুনের, ২৬ মে পাওয়া যাবে ৫ জুনের এবং শেষ দিন বিক্রি হবে ৬ জুনের অগ্রিম টিকিট।
ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট একজন ব্যক্তি একবারই কাটতে পারবেন এবং সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কিনতে পারবেন। অগ্রিম টিকিট ফেরত নেওয়া হবে না। ট্রেন চলাচলের দিন আসনের অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ দাঁড়িয়ে ভ্রমণের (স্ট্যান্ডিং) টিকিট বিক্রি করা হবে। এসব টিকিট অনলাইনে নয়, স্টেশনের কাউন্টার থেকে কাটতে হবে।
ঈদযাত্রা হবে ৭ দিন। অনলাইনে বিক্রি করা হবে শতভাগ টিকিট।
একজন সর্বোচ্চ একবার এবং চারটি টিকিট কাটতে পারবেন।
ঈদযাত্রা শুরু হবে ৩১ মে থেকে।
কোরবানির পশু পরিবহনে তিনটি ট্রেন চলাচল করবে
সাধারণত আন্তনগর ট্রেনের টিকিট যাত্রার ১০ দিন আগে বিক্রি করা শুরু হয়। তবে ৭ ও ৮ জুনের ট্রেনের টিকিট ঈদুল আজহার চাঁদ দেখার পর ঠিক করা হবে। কারণ, ঈদের দিন কোনো আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে না। ঈদের পরদিন অল্প কিছু ট্রেন চলাচল করে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঈদে ৪৩টি আন্তনগর ট্রেন প্রতিদিন ঢাকা থেকে ছেড়ে যাবে। এসব ট্রেনে মোট আসন ৩৩ হাজার ৩১৫টি। অর্থাৎ প্রতিদিন ৩৩ হাজারের বেশি অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে।
বিশেষ যাত্রীবাহী ও পশুবাহী ট্রেন
ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকায় কোরবানির পশু পরিবহনের জন্য ‘ক্যাটল স্পেশাল’ নামে তিনটি ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে। এর মধ্যে ক্যাটল স্পেশাল-১ জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ বাজার থেকে ২ জুন বিকেল ৫টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়বে। জামালপুরের ইসলামপুর থেকে দ্বিতীয় ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়বে বেলা ৩টা ৪০ মিনিটে। দেওয়ানগঞ্জ বাজার থেকে পরদিন বিকেল পাঁচটায় পশুবাহী তৃতীয় ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়বে।
ঈদ উপলক্ষে ১০টি যাত্রীবাহী বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করবে রেলওয়ে। এর মধ্যে তিস্তা স্পেশাল ট্রেন ৪ থেকে ৬ জুন পর্যন্ত ঢাকা থেকে দেওয়ানগঞ্জ বাজারের মধ্যে চলাচল করবে। একই সময়ে চট্টগ্রাম–চাঁদপুর পথে চলাচল করবে চাঁদপুর স্পেশাল। ঈদের পর ফিরতি যাত্রার যাত্রীদের জন্য এসব বিশেষ ট্রেন ৯ থেকে ১৪ জুন চলাচল করবে। একই সূচি মেনে গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত পার্বতীপুর স্পেশাল নামের দুটি ট্রেন চলাচল করবে।
ঈদের দিন শোলাকিয়া ঈদগাহে নামাজের সুবিধার্থে ভৈরব ও ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ পথে চারটি বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে।
আরও যেসব উদ্যোগ
ঈদ উপলক্ষে ৩ জুন থেকে ঈদ পর্যন্ত সব আন্তনগর ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধ বাতিল করা হবে। ঈদে বাড়তি যাত্রীর চাহিদা পূরণে পাহাড়তলী কারখানা থেকে ২৯টি মিটারগেজ ও সৈয়দপুর কারখানা থেকে ১৫টি ব্রডগেজ কোচ ট্রেনে সংযোজন করা হবে বলে রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সময়মতো ট্রেন পরিচালনায় জোর দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর জন্য বিভাগীয় ও আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণকক্ষে পৃথক পৃথক পর্যবেক্ষক সেল গঠন এবং কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনের ব্যবস্থা করা হবে।