জগদ্দল পাথরের মতোই বাংলাদেশের বুক থেকে অবশেষে নেমে গেল প্রায় ১৪ বছরের গণতন্ত্রহীনতা। ইচ্ছেমতো ভোট দিয়ে নিজের প্রতিনিধি নির্বাচন করার মানুষের মৌলিক অধিকার পুরোপুরি কেড়ে নিয়েছিল হাসিনা সরকার।
কথা বলার, লেখার ও পছন্দমতো কাজ করার স্বাধীনতাও ছিল সীমিত। মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার ক্ষোভ আগ্নেয়গিরির লাভার চেয়েও ভয়ংকর, যা যেকোনো সময় বিস্ফোরণের ঝুঁকির মধ্যে থাকে। তারপর সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকায় আওয়ামী নেতা ও মন্ত্রী-আমলাদের বিলাসবহুল জীবনযাত্রা, আর অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সীমিত আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস দেশের প্রত্যেক মানুষকে ক্ষুব্ধ করেছে। ক্ষুব্ধ করেছে অসংখ্য আওয়ামী লীগপন্থী বা আওয়ামী-সমর্থককেও। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এই বিস্ফোরণই ঘটল। আদতে এমনটা হওয়ারই কথা ছিল। শুধু দিন-তারিখ আমাদের জানা ছিল না।
কোটাবিরোধী আন্দোলন আর জনতার ক্ষোভ এক স্রোতে মিশে গেছে। আর এ জন্যই রাজপথে এত মানুষ এবং আন্দোলনের এত তীব্রতা। ফলে যা হওয়ার তা-ই হলো। অবসান হলো স্বেচ্ছাচারিতার। ধুলায় মিশে গেল দাম্ভিকতা। বিদায় নিতে হলো স্বৈরাচারকে। ভেঙে পড়ল সিংহাসন, ভেঙে পড়ল সবকিছু।